আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ক্ষমতাসীন দল এএনসির চাপে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা। এর মধ্য দিয়ে দিয়ে তার নয় বছরের শাসনামলের অবসান ঘটল।
আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) জুমাকে বুধবার দিন শেষেই পদত্যাগ করা, নয়ত বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের মুখোমুখি হওয়ার সময়সীমা বেধে দিয়েছিল।
পরে এক ভাষণে তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরে সিরিল রামাফোসাকে পার্টি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে এএনসি যেভাবে তার আগাম বিদায়ের পথ তৈরি করেছে, তার সঙ্গে তিনি একমত নন। তবে তিনি দলের নির্দেশ মেনে নিচ্ছেন।
৭৫ বছর বয়সী জুমা দুর্নীতির নানা অভিযোগের কারণে বেশ কিছু দিন পদত্যাগের জন্য চাপের মুখে ছিলেন।
২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের আগে জুমাকে পদত্যাগে বাধ্য করার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ধনী ব্যবসায়ী গুপ্ত পরিবারের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রভাবশালী এ পরিবারের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট জুমার সঙ্গে বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে নিজেদের ব্যবসায়িক সুবিধার জন্য দেশটির রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে।
বুধবার সকালে গুপ্ত পরিবারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্রি স্টেট প্রদেশের ভ্রেদে শহরে দরিদ্র কৃষ্ণাঙ্গ কৃষকদের সহায়তা করতে শুরু হয়েছিল এস্তিনা ডেইরি ফার্ম প্রকল্প। এ প্রকল্পের নামে গুপ্ত পরিবার লাখ লাখ ডলার পকেটে ভরেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত বছর ফাঁস হওয়া কিছু ইমেইল থেকে গুপ্ত পরিবারের ওই পুকুর চুরির খবর প্রকাশ্যে চলে আসে। সান সিটিতে গুপ্ত পরিবারের এক সদস্যের চোখ ধাঁধানো বিয়ের আয়োজনে ওই অর্থের কিছু অংশ ব্যয় হয়েছে বলেও জানা গেছে।
গুপ্ত পরিবার এবং জুমা উভয়ই কোনোরকম অপকর্ম করার কথা অস্বীকার করে আসছেন।
পদত্যাগের ঘোষণায় জুমা বলেন, এএনসির মধ্যে যে সহিংসতা ও বিভক্তি তৈরি হয়েছে, সেই কারণে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমার নামে কোন প্রাণহানি ঘটেনি। আমি চাই না, এমটা ঘটুক। এজন্য আমি প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
জুমা বলেন, দলের নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমার দ্বিমত থাকলেও আমি এএনসির একজন অনুগত কর্মী। প্রেসিডেন্ট হিসেবে না থাকলেও আমি দক্ষিণ আফ্রিকা ও এএনসির হয়ে কাজ করে যাব।
১৯৪২ সালের এপ্রিলে দেশটির খওজুলু নাটাল অঞ্চলের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া জুমার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। ১৯৫৯ সালে এএনসিতে যোগদানের পর তিনি দলটির সামরিক শাখার সক্রিয়া সদস্য হিসেবে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ