আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে বোমা হামলার ঘটনাস্থলের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে মার্কিন দৈনিক দ্য নিউইয়র্ক টাইমস। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। লন্ডনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে এ নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করা হয়েছে। এ ধরনের ছবি প্রকাশের মাধ্যমে হামলার তদন্ত-প্রক্রিয়া এবং হামলার শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের আস্থার জায়গা ছোট করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে দেশটি।
গত সোমবার রাতে ম্যানচেস্টারে মার্কিন সংগীত তারকা অ্যারিয়ানা গ্র্যান্ডের কনসার্টে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২২ জন নিহত ও ৬৪ জন আহত হয়। হামলাকারীর হামলার সম্ভাব্য যন্ত্রপাতি, বিস্ফোরক ও ব্যাকপ্যাকের ছিন্নভিন্ন অংশ যুক্তরাজ্য পুলিশের ঘটনাস্থলে জব্দ করে রাখার কিছু ছবি প্রকাশ করে নিউইয়র্ক টাইমস। এসব ছবি নিয়েই তোলপাড় শুরু হয়েছে যুক্তরাজ্যে। নিউইয়র্ক টাইমস ছবি প্রকাশ করে বলেছে, হামলার স্থানে যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ এগুলো জব্দ করেছে। এতে রয়েছে ব্যাকপ্যাকের অংশ, নাট ও স্ক্রু এবং ডিভাইসের অংশ—যেটাকে সম্ভাব্য বিস্ফোরক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। পরে অবশ্য এ ধরনের ছবি যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমেও প্রকাশ করা হয়।
যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবাদবিরোধী পুলিশের প্রধান বলেছেন, এ ধরনের ছবি প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের তদন্ত-প্রক্রিয়া এবং হামলার শিকার ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের আস্থার জায়গাকে ছোট করা হয়েছে। যুক্তরাজ্য সরকারের প্রশাসনিক কেন্দ্রস্থল হোয়াইট হল এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, তারা ক্ষুব্ধ এবং এ ধরনের ছবি প্রকাশ গ্রহণযোগ্য নয়। গ্রেটার ম্যানচেস্টারের মেয়র অ্যান্ডি বার্নহাম দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে বিষয়টি তুলেছেন।
এর আগে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যামবার রুড বলেছেন, তিনি হামলাকারী সালমান আবেদির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য প্রকাশের বিষয়টি নিয়েও বিরক্ত। তিনি এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনকে বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে এটা আর ঘটা উচিত নয়।’
যুক্তরাজ্যের জাতীয় পুলিশ চিফস কাউন্সিল জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য বিশ্বব্যাপী বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নিরাপত্তা অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্কের মূল্য দেয়। সে ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘অগ্রাধিকারমূলক ও সংবেদশীল তথ্য’ ভাগ করে নেওয়াকে তারা অনুমোদন করে। তবে যখন বিশ্বাসে ফাটল ধরে, তখন তা সম্পর্কগুলোকেও দুর্বল করে ফেলে এবং তা আমাদের তদন্ত, ভিকটিম, প্রত্যক্ষদর্শী ও তাদের পরিবারের আস্থাকেও দুর্বল করে ফেলে।
মেয়র অ্যান্ডি বার্নহাম বলেছেন, ‘ম্যানচেস্টার হামলার কোনো তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশের আগে “সতর্কতার সঙ্গে উপস্থাপন” করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। অথচ কিছু তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে আসতে দেখা গেল। এতে আমি উদ্বিগ্ন হয়েছি; এই উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, হামলা নিয়ে যে তদন্ত হচ্ছে, তাতে ব্রিটিশ পুলিশ ও নিরাপত্তাকাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানেরই নেতৃত্ব থাকা প্রয়োজন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ