নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছেন, খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে উৎসাহ দেখানোর কিছু নেই। পৃথিবীর অনেক দেশেই শীর্ষ নেতাকে আদালত সাজা দিয়েছেন। কিন্তু ওইসব দেশে রাজনীতিবিদরা হাসিতামাশা করেননি বা উৎসাহ দেখাননি।
রোববার বেসরকারি একটি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, কষ্টের সঙ্গে বলতে হয়, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পর আমরা এত সংগ্রাম করেছি তারপরও নির্বাচনটাকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করতে পারছি না। এই নির্বাচন নিয়ে যত রকম গ-গোল বাজছে। এই যে কাজটা হলো আমি জানি না নির্বাচন সামনে থাকলে পলিটিক্যালকে প্রভিকশন দিয়ে শুধু আইন আর কনভিকশন দিয়ে চিন্তা করলে হবে না পলিটিক্যাল লিডারসদের। তাদের চিন্তা করতে হয় সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা রাখতে হবে। এটা নির্বাচনের বছর। বেগম খালেদা জিয়াকে এখনই যদি সাজা দেয়া না হতো তবে কিছু যেত বা আসতো না। কিন্তু এখন যেহেতু নির্বাচন নিয়ে একটা গ-গোল অলরেডি আছে তার ওপর একটা কনভিকশন আমার ব্যক্তিগত ধারণা নির্বাচনে সংশয় ছিলই এটা আরো আরো এগ্রোভেট করা হলো। আপনি এমনিতেই আমাকে বিশ্বাস করেন না। আরো অবিশ্বাসের কাজ করলাম আমি। আমি আরো অসুবিধায় পড়লাম। এইটার মনে হয় দরকার ছিল না।
রায়ের পরে রাজনীতি কোন পথে যাচ্ছে- এমন প্রশ্নে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, আইন যদি নিজস্ব ধারায় চলতে থাকে তবে বিচার হয়েছে। এর সঙ্গে তো রাজনীতির কোনো অংশ থাকার কথা না। আইন মতো বিচার হয়েছে শাস্তি হয়েছে। আপিল করবে। দুইটা আপিল এখনও হবে। রাজনীতিটা আমার মনে হয় আনা হয়েছে এইটা মনে হয় বলতে পারি কাউকে অফেন্স না দিয়ে। এটা মনে হয় সরকারের পক্ষে বোকামি হয়েছে। মামলায় ঠকছে এটা মনে হয় আইনের ব্যাপার। এটা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বা মন্ত্রী হিসেবে কারো এখানে কোনো উৎসাহ দেখানো উচিত না। শাস্তি হয়েছে এটা ‘আই অ্যাম নট কনসার্নড উইথ, ল হ্যাজ টেকেন ইটস রোল’। এই যে আমাদের আশেপাশে অনেক দৃষ্টান্ত দেয়া হয়। সাউথ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্টকে কনভিকশন দিয়েছে এটা নিয়ে কোনো দলে হাসাহাসি হয়নি, মিষ্টি খাওয়া হয়নি। ইসরাইলে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু এ নিয়ে কোনো দলীয় আলোচনা হয়নি। অতএব, প্রধানমন্ত্রীর এটা ডিফেন্ড করারও দরকার নাই আর বিএনপিরও রাস্তায় আন্দোলন করারও কিছু নাই। এটা আমার কথা। যেহেতু বাংলাদেশে এই জিনিসটা চলছে না সেহেতু রাজনীতি এতটা ঘোলাটে হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমি সবসময় বলে আসছি রাজনীতিটা বিশেষ করে জনগণভিত্তিক, রাজনীতিটা যত খোলামেলা হয় তত ভালো। মানুষকে কথা বলতে দেন, তর্ক করতে দেন। তাহলে তিক্ততাটা চলে যায়। আলোচনার পরে তিক্ততা থাকে না। তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্রের সবচাইতে সুন্দর দিক হলো স্বচ্ছ একটা নির্বাচন জনগণের ভোটে হয়েছে। আমি ঠকেছি ঠকেছি। আমি জিতছি, আমি জিতছি। দুর্ভাগ্য হলো ইলেকশনকে নিয়ে যত খেলা।
ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, আওয়ামী লীগে সোহরাওয়ার্দীর মতো লোক, মানিক মিয়ার মতো লোক যে সমস্ত কথা বলে গেছেন, যে সমস্ত দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন সেগুলো আওয়ামী লীগ ভুলে গেছে। বঙ্গবন্ধুর কথা বলা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সততা, শালীনতা এগুলো অনুসরণ করা হয় না। শুধু বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু করলে তো হবে না। বঙ্গবন্ধু উদার ছিলেন। রাজনীতিতে উদার মন নিয়ে চলতে হয়। ভিন্ন মত নিয়ে চলতে হয়।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ