স্পোর্টস ডেস্ক:
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের হাসিখুশি চেহারাটা দেখে ত্রিদেশীয় সিরিজের দৃশ্যটা মনে পড়ল। সিরিজে শ্রীলঙ্কার শুরুটা হয়েছিল বাজে। বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের কাছে টানা দুই ম্যাচ হেরে তাদের ফাইনালে ওঠাটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। খাদের কিনারায় থাকা হাথুরুর বিষণ্ন মুখটা দেখে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসা, বাজে শুরু হওয়ায় কতটা হতাশ? শ্রীলঙ্কান কোচ ম্লান হাসিতে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘কীভাবে উড়লাম, সেটি ব্যাপার নয়। কীভাবে অবতরণ করছি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’ ত্রিদেশীয় সিরিজের পর টেস্ট সিরিজটাও মুঠোয় পুড়ে হাথুরু দেখিয়ে দিয়েছেন, দৌড় আগে শুরু করাটাই সব নয়, সমাপ্তি রেখায় সবার আগে পৌঁছানোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তবে ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্স, এমন অসহায় আত্মসমর্পণে অবাক হাথুরু নিজেই। এতটা বাজে পারফরম্যান্স অতীত শিষ্যদের কাছ থেকে আশা করেননি তিনি, ‘এটা ভীষণ কঠিন উইকেট। তারা পারেনি বলে দোষ দিতে পারেন না। তবে যেভাবে তারা ব্যর্থ হয়েছে, সেটি আমিও প্রত্যাশা করিনি। তারা এর চেয়ে ভালো ব্যাটিং করতে পারত। এই উইকেটে ৩০০ রান প্রত্যাশা করতে পারেননি। তবে প্রথম দিন ২৪০ ভালো স্কোর। আমরা করতে পেরেছে ২২০ (২২২), কিছুটা কম হয়েছে। তবে ভাবতে পারিনি তারা প্রথম ইনিংসে ১১০ রানে গুটিয়ে যাবে।’
ভারত সফরে টানা ব্যর্থতার ধকল নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল শ্রীলঙ্কা। ত্রিদেশীয় সিরিজের শুরুটাও তারা ভালো করতে পারেনি। হাথুরু কী এমন মন্ত্র পড়ে দিলেন, রাতারাতি বদলে গেল শ্রীলঙ্কা? জিতে নিলে টানা দুটি সিরিজ? প্রশ্নটা শুনে হাথুরুর মুখে হাসি, ‘আপনাকে সব সময়ই ভালোভাবে তৈরি হতে হবে। দলের শক্তিমত্তা আপনাকে বুঝতে হবে। নিজের শক্তি বুঝেই পরিকল্পনা ও কৌশল সাজতে হবে। আপনি যদি ভালোভাবে তৈরি থাকেন ও নিজের শক্তি অনুযায়ী ভালো পরিকল্পনা থাকে, বলছি না সব জায়গায় সফল হতে পারবেন। তবে সব জায়গায় ভীষণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দল হতে পারবেন।’
শ্রীলঙ্কার স্পিন বিভাগ শক্তিশালী জেনেও স্পিনিং উইকেট খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশ দলের এই সিদ্ধান্তে যদিও অবাক হননি হাথুরু, ‘গত ছয় মাসে এখানে অনেক খেলা হয়েছে। এই সময়ে একজনের পক্ষে ভিন্ন উইকেট তৈরি করা কঠিনই। আপনি যদি ত্রিদেশীয় সিরিজে দেখেন প্রায় প্রতি ম্যাচেই উইকেট ভেঙেছে। আমরা শুরুটা ভালো করেছি। একটা টেস্টের উইকেট তৈরিতে আপনাকে অন্তত ছয় মাস সময় দিতে হবে। ’উইকেটকে কাজে লাগিয়ে ফলটা নিজেদের দিকে নিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ ব্যর্থ হয়েছে স্কিলের অভাবে নাকি ড্রেসিং রুমে একজন যোগ্য টেকনিশিয়ান না থাকায়—প্রশ্নটা আসছে ঘুরেফিরেই।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি