২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৯:৩৯

জনমনে প্রশ্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি খালেদা জিয়া !

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট  মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তবে তার আইনজীবীরা বলেছেন, তারা আপিল করবেন। বিএনপি বলেছে, এ রায়কে তারা আইনী ও রাজনৈতিক উভয়ভাবেই মোকাবিলা করবে। অনেকের মনেই এ প্রশ্ন উঠতে পারে যে, তাহলে খালেদা জিয়াকে আসলে ঠিক কত দিন জেলে থাকতে হতে পারে?

আইনবিদ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. শাহদীন মালিক বলছেন, রায়টা কতটা ঠিক হয়েছে তা বোঝা যাবে উচ্চতর আদালতে আপিল শুরু হলে।

প্রশ্ন হলো- রায়ের সত্যায়িত কপি হাতে পাবার পরই কেবল খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিলের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন এবং ততদিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া বন্দী থাকবেন। এই রায়ের কপি পাবার কি কোন সময়সীমা আছে?

শাহদীন মালিক বলেন, কোনো সময়সীমা বাঁধা নেই। তবে সার্টিফায়েড কপির আগে টাইপ করা কপি যাকে বলা হয় ট্রু কপি – সেটা হয়তো আইনজীবীরা আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকেই পেয়ে যেতে পারেন এমন কথা শোনা গেছে। তাহলে হয়তো আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি নাগাদই আপিল দায়ের করা যাবে। হয়তো আপিলের সাথেই জামিনের আবেদনও করবেন তারা।

“আইনী প্রক্রিয়ায় যেটা হয়, নারীদের ব্যাপারে, বয়েস বেশি হলে বা সাজা কম বলে – কারণ এটা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নয় এবং পাঁচ বছরের কারাদণ্ডকে কম সাজাই বলতে হবে। তাই এসব বিবেচনায় হয়তো আমার সাধারণ জ্ঞানের যেটা ধারণা হয় – জামিন হয়ে যেতে পারে। এক বা দু’সপ্তাহে ছাড়া পেয়ে গেলে এক অর্থে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও শুরু করতে পারবেন,”- বলছিলেন ড. শহাদীন মালিক।

তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ নিশ্চয়ই এটা বলবে যে, আপিলে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত বেগম জিয়া একজন দুর্নীতির দায়ে দোষী ব্যক্তি। কিন্তু বাংলাদেশে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও দুর্নীতির মামলায় জেল খেটেছেন। তাই বিএনপিকে একটা ধাক্কা সামলাতে হবে। রাজনীতিতে কিছুটা প্রভাব পড়বে। কিন্তু তা খুব বেশি পড়বে এটা মনে হচ্ছে না।”

কিন্তু আরেকটি বড় প্রশ্ন হলো, এর পর খালেদা জিয়া কি এ বছরের শেষে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন?

এ নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

বিএনপির রাজনীতির একজন পর্যবেক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলছেন, খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কিনা – তার চাইতেও বড় প্রশ্ন হচ্ছে- নির্বাচনের সময় তিনি জেলের ভেতরে থাকবেন না মুক্ত থাকবেন।

আসিফ নজরুলের কথায়, খালেদা জিয়া যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না-ও পারেন, তবুও তিনি যদি জামিনে থাকেন এবং প্রচারাভিযানে অংশ নিতে পারেন – তাহলে এই কারাদণ্ড বিএনপির জন্য নেতিবাচক না হয়ে বরং ইতিবাচক হতে পারে।

“কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, কোনো কারণে যদি বেগম জিয়া জামিন না পান এবং তার বিরুদ্ধে আরো মামলা রয়েছে সেটাও মনে রাখতে হবে – তিনি যদি ক্যাম্পেইনটা করতে না পারেন, বিএনপি পরিস্থিতিটা কতটা কাজে লাগাতে পারবে – সেটা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ থাকবে। তাই বেগম জিয়া নির্বাচনের সময় জামিনে মুক্ত থাকবেন কিনা এটার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে” – বলছিলেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

 

প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৮ ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ