নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি ‘মিথ্যা’ সাজানো মামলায় এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার পুরানো ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত প্রাঙ্গণে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা জানান।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা করেন ওই আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় বিএনপি প্রধানের ছেলে তারেক রহমানসহ বাকী আসামিদের ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অনাদায়ে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং আরো দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রায় শুনতে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে রওনা হন খালেদা জিয়া। মগবাজার এলাকায় পৌঁছলে হঠাৎ করেই হাজারো নেতাকর্মী গাড়িবহরের দখল নেয়। পথে পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
এরপর বেলা একটা ৫২ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়া আদালত কক্ষে প্রবেশ করেন। তার পরনে ছিল অফ-হোয়াইট কালারের শাড়ি। বেলা দুইটা ১১ মিনিটে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। ৬৩২ পৃষ্টা রায়ের সংক্ষিপ্তসার পাঠ করেন বিচারক। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ। মামলায় এজাহারে বলা হয়, ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এ মামলার আসামিরা।
মামলা হওয়ার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং দুদক আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম শেষ হতে ২৩৬ কার্যদিবস লেগেছে। ৩২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২৮ দিন ধরে আসামি খালেদা জিয়া ৩৪২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
আর ১৬ দিন তার পক্ষ থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। গত ২৫ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এরপর ৮ ফেব্রুযারি রায়ে দিন ঠিক করেন আদালত। খালেদা জিয়ার ও তারেক রহমান ছাড়াও এ মামলায় আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ