নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘মাল্টা’ পাহাড়ি ফল হিসেবে পরিচিতি হলেও সমতল ভূমিতেও রয়েছে এ ফলের ব্যাপক সম্ভাবনা। উত্তরের কৃষি প্রধান এলাকা নীলফামারীতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের মাল্টা। মাটির গুণাগুণ ঠিক থাকলে সমতল এলাকাতেও মাল্টা চাষ করে লাভবান হতে পারেন কৃষকরা। এমনটাই জানিয়েছেন নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার সফল মাল্টা চাষী এস এম আব্দুল্লাহ।
ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের কাঁঠালতলী এখন পরিচিত মাল্টা গ্রাম হিসেবে। এই গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ ১০ বিঘা জমিতে ১২ বছর আগে ৫০টি মাল্টার চারা রোপণ করেন। বছর খানেকের মধ্যেই গাছে ফল ধরে। তিনি জানান, মৌসুমে একটা গাছে দেড় মণ থেকে দুই মণ মাল্টা ধরে। তার বাগানের মাল্টার সুনাম রয়েছে এলাকাজুড়ে। অন্যান্য মাল্টার চেয়ে এই বাগানের মাল্টা খেতে সুস্বাদু এবং বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
চাষী এসএম আব্দুল্লাহ বলেন, মাল্টার বাগান করছি ১০/১২ বছর আগে। এই মালটাগুলো বেশির ভাগই নাগপুরী, দার্জিলিং ও পাকিস্তানের। এই মাল্টার কোয়ালিটি খুবই ভালো। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে চারা নিয়ে যায়। মাল্টা চাষ লাভজনক ও এর চারা গাছের চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য গত বছর বিদেশি উন্নতজাতের নাগপুরী, দার্জিলিং, মরক্কো, ভারত, পাকিস্তানি এবং সরকারি বারি-১ জাতের আরো ৭০০ চারা রোপণ করি।
এগুলোতে আগামী বছরে ফল ধরা শুরু করবে। দূর-দূরান্ত থেকে ফল বিক্রেতারা এসে বাগান থেকে মালটা নিয়ে যায়। মাল্টা মৌসুমে একবার আসে কিন্তু চারা বিক্রি হয় সারাবছর। চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে ফল আসে এটা লাভজনক ব্যবসা।
তিনি আরো বলেন, বাগানে আমি কোনো কীটনাশক ব্যবহার করি না। জৈব সার এবং আমার নিজস্ব উদ্ভাবিত প্রযুক্তিতে পোকা-মাকড় নিধন করি। এখানকার মাটিতে উপরে বালু এবং নিচে পাথর রয়েছে তাই এখানকার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী।
মাল্টা চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ উদ্বুদ্ধ করছে জানিয়ে নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ উপ-পরিচালক আবুল কাশেম আযাদ বলেন, এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া এ ধরনের মাল্টা বাগান করার ক্ষেত্রে খুবই উপযোগী। যে কেউ লাভজনক সমন্বিত বাগান করতে এগিয়ে এলে এখান থেকে চারা নিয়ে অনায়াসেই নতুন বাগান করতে পারবেন বলে মনে করেন তিনি।
নীলফামারী জেলার প্রথম মাল্টা চাষী হিসেবে আব্দুল্লাহ সফলতা অনুকরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানা তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, নীলফামারী জেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলে ১২ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ করা হচ্ছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ