নিজস্ব প্রতিবেদক:
বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত ৫দিন ধরে দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে কারপাসসহ কাস্টমস কর্মকর্তাদের হয়রানির প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সোমবার দুপুর পর্যন্ত একটানা দু’দেশের বন্দর এলাকায় আটকা পড়েছে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক। অধিকাংশই বাংলাদেশের শত ভাগ রফতানিমুখি গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামালসহ পচনশীল পণ্য রয়েছে।
তবে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরে লোড-আনলোডসহ বন্দর ও কাস্টমসের সকল কার্যক্রম সচলসহ দু’দেশের মধ্যে পাসপোর্ট যাত্রীদের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ভারতের পেট্রাপোলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও সিএন্ডএফ এজেন্টসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা তাদের নিজ নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকায় বিষয়টি সুরাহার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। রোববার বিকেলে পেট্রাপোল টার্মিনালের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ভারতীয় ট্রাক মালিক, ট্রাক চালক, সিএন্ডএফ এজেন্টরা।
ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, পেট্রাপোল কাস্টমসের নতুন একজন কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট যোগদান করার পর থেকে নানা হয়রানি শুরু করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তিনি নিজেকে উপরি মহলের হাত রয়েছে এই অজুহাত দেখিয়ে একের পর এক হয়রানি করছে আমাদের উপর।
সর্বশেষ বাংলাদেশে দ্রুত পণ্য রফতানি করার জন্য পূর্বে সিএন্ডএফ এজেন্টের কর্মচারীরা কাস্টমস অফিসারে মাধ্যমে মেনিফেস্ট তৈরি করার পর কারপাস (গেট পাস) ইস্যু করে পণ্য রফতানি করতো। হঠাৎ করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এক নির্দেশনা জারি করে যে, তারা নিজেরাই কারপাস ইস্যু করে রফতানি পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করাবেন।
এ ধরনের নির্দেশনায় পণ্য রফতানিতে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। রফতানি পণ্যের কোন কাগজপত্র না পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কোন কারপাস ইস্যু করতে পারেনি। যার কারণে দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। তিনি আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। রোববার সরকারি ছুটি থাকায় কোনো আলোচনা হয়নি। সোমবার দুপুরের পর সৃষ্ট বিষয়ের ব্যাপারে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জানান, ভারতে কারপাস জটিলতাসহ অন্যান্য কারণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে একটানা ৫দিন আমদানি রফতানি বন্ধ রয়েছে। এর ফলে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে কোনো পণ্য আমদানি-রফতানি হয়নি।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের অনেক আমদানিকারকের পণ্যচালান পেট্রাপোলে আটকা পড়েছে। সেই সঙ্গে রফতানির জন্য আসা শত শত ট্রাক সীমান্তে পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এসব পণ্য চালানের মধ্যে গার্মেন্টস শিল্পের অনেক কাঁচামাল রয়েছে। অনেকের শীপমেন্ট বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম জানান, পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরে পণ্য লোড-আনলোড স্বাভাবিক রয়েছে। পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াতও স্বাভাবিক আছে। আমদানি-রফতানি সচল হলে গোটা বন্দর এলাকায় পণ্যজটের পাশাপাশি যানজটও প্রকট আকার ধারণ করবে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ