২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:৪৬

সিলিং ফ্যানের দাম এক লাখ টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) একটি প্রকল্পে একটি সিলিং ফ্যানের মূল্য এক লাখ এক হাজার টাকা ধরে ৪৫০টি ফ্যান কেনার জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার মার্কিন ডলার। যা প্রায় চার কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ‘মর্ডানাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফর ডিজিটাল কানেকটিভিটি’ (এমওটিএন) প্রকল্পে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে বিভিন্ন খাতে।

২০১৫ সালের মার্চ থেকে প্রকল্পটি গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে অতিরিক্ত ব্যয় নিয়ে সমালোচনার মুখে গত ৪ এপ্রিল একনেক সভা থেকে এর ‘বিস্তারিত প্রকল্প প্রস্তাব’ (ডিপিপি) প্রত্যাহার করা হয়। এখন আবারও তা একনেকে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে টেলিযোগাযোগ খাতের সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী চক্র।

অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের চেয়ে অতিরিক্ত ব্যয়ে বিনা টেন্ডারে চীনের প্রতিষ্ঠান জেডটিইকে কাজ পাইয়ে দেওয়াই সংশ্লিষ্টদের মূল লক্ষ্য। ফলে এ প্রকল্প গ্রহণের উদ্দেশ্যও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমও অতিরিক্ত ব্যয় এবং বিনা টেন্ডারে এ প্রকল্পের কাজ একটি কোম্পানিকে দেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন। এরপরও অতিরিক্ত ব্যয় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা যুক্ত রেখে একনেকে এর প্রস্তাব পাঠানো হয়। তবে প্রভাবশালী মহলের তৎপরতার মুখে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং প্রকল্পের তত্ত্বাবধানকারী বিটিসিএলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে এখন মুখ খুলতে চাইছেন না।

এদিকে অনুসন্ধানে জানা যায়, ৪৫০টি সিলিং ফ্যান বা বৈদ্যুতিক পাখা কেনার জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর ফলে প্রতিটি পাখার দাম পড়ছে প্রায় এক লাখ এক হাজার টাকা! এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ‘জিপন’ যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে প্রতিটির মূল্য ১০১ মার্কিন ডলার দেখানো হয়েছে। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারের একাধিক কোম্পানির খুচরা মূল্য থেকে দেখা যায়, এর মূল্য বর্তমান বাজারে ৪৫ থেকে ৫০ মার্কিন ডলার।

এছাড়া এখনো বিটিসিএলে আগের একটি প্রকল্পের জন্য কেনা প্রায় এক লাখ জিপন পড়ে আছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এ মজুদ বিবেচনায় নিলে মোট ব্যয় আরও অনেক কমে আসত। কিন্তু বাস্তবে তা করা হয়নি। এভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় দেখিয়ে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা।

কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ৮০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য একনেকে গত ৪ এপ্রিল চিঠি পাঠানো হয়। একনেকের ওই সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, সভার শুরুতেই এ প্রকল্প প্রত্যাহার করা হয়।

দৈনিক দেশজনতা/এমএইচ

প্রকাশ :মে ২৩, ২০১৭ ১২:৫২ অপরাহ্ণ