নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার প্রধান আসামি ঘাটাইল-৩ আসনের সরকারদলীয় এমপি আমানুর রহমান রানার সাক্ষ্যগ্রহণ পঞ্চমবারের মতো পিছিয়েছেন আদালত। সোমবার টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনছুর মিয়া সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন। কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে বলেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এমপি রানা ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত নন, তাই তাকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি।
অবশ্য আদালতে এদিন মামলার বাদী মুক্তিযোদ্ধা ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমেদ, ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন ও মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুন হাজিরা প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু, এমপি রানাকে অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির না করায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। আসামিপক্ষের আইনজীবী দয়াল চৌধুরী জানান, এমপি রানা গত বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর এমপি রানা ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর থেকে বেশ কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিন্ম আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি রানা। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে। তদন্ত চলাকালে ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট এমপি আমানুর রহমান খান রানার ঘনিষ্ট কর্মী আনিসুর রহমান রাজা এবং ২৪ আগস্ট মোহাম্মদ আলী গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। পরে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বিস্তারিত জানান।
জবানবন্দিতে তারা বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে আমানুর রহমান খান রানা, তার তিনি ভাই- টাঙ্গাইল পৌরসভার তদানীন্তন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও টাঙ্গাইল জেলা বণিক সমিতির সভাপতি জাহিদুর রহমান খান কাকন জড়িত। এরপর ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এমপি রানা ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এই হত্যা মামলায় এখনো ৭ আসামি পলাতক। এমপি রানাসহ চারজন কারাগারে এবং বাকি তিনজন জামিনে আছেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ