দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক:
শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় কানাডা থেকে ছুটে আসছে হাজারো রাজহাঁস (গিজ)। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যানসাসসহ বিভিন্ন রাজ্যের ছোট-বড় শহরের লেক, খোলা মাঠ আর পার্কে এসব হাঁসের দেখা মেলে। কনকনে শীত আর তুষারপাতের আগমুহূর্তে যেন আকাশ থেকে হাঁসের মিছিল নেমে পড়ে খোলা মাঠে। এ সময় হাঁসের প্যাঁক-প্যাঁকে মুখর হয়ে ওঠে মাঠঘাট। এসব অতিথি পাখিকে আমন্ত্রণ জানাতে উচিটা শহর যেন অপেক্ষায় থাকে। প্রতিবছর শীত আসার আগে এই হাঁসের ঝাঁক (গিজ) উড়ে এসে উচিটা শহরের লেক, মাঠঘাট মাতিয়ে তোলে। কোলম্যান মিডল স্কুলের অষ্টম গ্রেডের শিক্ষার্থী মেহজুবা বলেন, প্রকৃতির ছায়াঘেরা শান্ত শহর উচিটা। হাঁসগুলোর কাছে এই পরিবেশ বন্ধুত্বপূর্ণ মনে হয়। তাই এরা কানাডা থেকে এখানে ছুটে আসে। এই শহরের মানুষ এদের সঙ্গে খুবই আন্তরিক আচরণ করে।
উচিটা ফ্রেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অ্যালান মেকারন বলেন, অনেক শহরবাসী খাবার হাতে নিয়ে আদর করে হাঁসদের মুখে তুলে দেন। হাঁসেরা ঘাস খেতে পছন্দ করে। আশপাশের কৃষিখেতে (সয়াবিন, ভুট্টা, শস্য) খাবার খুঁজে বেড়ায়। তুষারপাত হওয়ার পর সূর্যের আলোতে মাটির ভেতর থেকে একধরনের পোকামাকড় উঠে আসে। হাঁসগুলো সেটাও খেতে পছন্দ করে।
বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী চার্লি কোপের জরিপ মতে, এ বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে উচিটা ও আশপাশের এলাকা রকরোড থেকে রিজ পর্যন্ত বিভিন্ন লেক ও মাঠে সরেজমিনে গণনা করে আনুমানিক ৩৪ হাজার ৫৮৬টি হাঁস দেখেছেন। ২০১৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার। ২০১১ সালে ছিল ৭১ হাজার ৬০০ টি। ১৯৮৩ সালে ছিল একেবারেই কম—মাত্র এক হাজার ৬০০ টি।
জীববিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অ্যালান মেকারনের গবেষণায় দেখা যায়, অতিথি পাখি সব সময় খোলা জল ও ঘাস খুঁজে বেড়ায়। উচিটা শহরে এগুলো পাওয়া যায়। এসব পাখি হাজার-হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এখানে আসার পেছনে চারটি প্রধান কারণ উঠে এসেছে। এগুলো হলো তাপ, জল, খাদ্য ও নিরাপত্তা। শহরের ভেতরে সব জায়গায় হাঁসদের বিচরণ রয়েছে। কোনো কারণে পাখিগুলো মূল সড়কে উঠে এলে যতক্ষণ না রাস্তা পার হয়—ততক্ষণ গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকার বিধান রয়েছে। শহরের মধ্যে এসব পাখি ধরা বা মারা আইনত অপরাধ।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি