নিজস্ব প্রতিবেদক:
ধর্মীয় উগ্রবাদে অনুপ্রেরণা দেয়া, জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতা, স্বাধীনতা বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনাসহ নানা অভিযোগ থাকা লেকহেড গ্রামার স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শনিবার বিকাল চারটার দিকে স্কুলের সামনে থেকে তিনি ‘নিখোঁজ’ হন।
ওই ঘটনায় নিখোঁজ মতিনের অফিসের স্টাফ ইদ্রিস আলী সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর-১৩৭৮) করেছেন। জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, বিকাল চারটার দিকে সাদা পোশাকে সাত থেকে আটজন লোক এসে গুলশানের লেকহেড গ্রামার স্কুলের সামনে থেকে মতিনকে তুলে নিয়ে যায়।
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সালাউদ্দিন জানান, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে লেকহেড গ্রামার স্কুলের মালিক খালেক হোসেন মতিন নিখোঁজের বিষয়ে থানায় একটি জিডি হয়েছে। জিডির পরিপ্রেক্ষিতে মতিনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, ধর্মীয় উগ্রবাদে অনুপ্রেরণা দেয়া, জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতা, স্বাধীনতা বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে গত নভেম্বরে ঢাকার ধানমন্ডি ও গুলশানে অবস্থিত লেকহেড গ্রামার স্কুল বন্ধ করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি করে এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে পরিচালনা পর্ষদ করে স্কুলটি চালুর নির্দেশ দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত।
২০০৬ সালে ধানমন্ডির ৬/এ সড়কে প্রতিষ্ঠিত হওয়া লেকহেড গ্রামার স্কুলের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। স্কুলের বনানী ও গুলশানে আরও দু’টি শাখা রয়েছে। প্রতিষ্ঠাকালীন এই স্কুলের অধ্যক্ষ ছিলেন জেনিফার আহমেদ, যিনি বাংলাদেশে হিযবুত তাহরীর সংগঠিত করার অন্যতম প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম মাওলার স্ত্রী। জেনিফার নিজেও হিযবুতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
২০০৯ সালে হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ হওয়ার পর এই স্কুল প্রথম আলোচনায় আসে। ওই বছরই এই স্কুল পরিচালনার পূর্ণ দায়িত্ব নেন হারুন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কর্ণধার হারুন অর রশিদ ও তার ছেলে মোস্টওয়ান্টেড জঙ্গি হিসেবে পরিচিত রেজওয়ান হারুন।
হারুন বেশিরভাগ সময় লন্ডনে থাকলেও গতবছরের ১১ মে সকালে যুক্তরাজ্য থেকে আসা এমিরাটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে ঢুকে আত্মগোপন করেন।
সূত্রমতে, রেজওয়ানের লেকহেড গ্রামার স্কুলে আলোচিত যুক্তরাষ্ট্রগামী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ উড়িয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া রাজীব করিম, তার ভাই তেহজিম করিম ও তেহজিবের স্ত্রী সিরাত করিম এবং তাদের সহযোগী মাইনুদ্দিন শরীফ শিক্ষক ছিলেন।
২০১০ সালে ইয়মেনে আল-কায়েদাবিরোধী অভিযোনে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তেহজিব করিম। এছাড়া পরিবারসহ সিরিয়ায় চলে যাওয়া মাইনুদ্দিনের ভাই রেজওয়ান শরীফও লেকহেডের শিক্ষক ছিলেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ