নিজস্ব প্রতিবেদক:
শহীদ জিয়াউর রহমানের জন্মদিনে তাঁর প্রদর্শিত পথেই আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে জনগণের ঘাড়ে চেপে বসা বর্তমান ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাভূত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সের অধিনায়ক, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শনের দিশারী সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’
‘এদেশের এক চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে ৭ নভেম্বর ১৯৭৫-এ জাতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হন সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য নেতৃত্বহীন জাতির দিশারী হয়ে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাত্তোর দুঃসহ স্বৈরাচারী দুঃশাসনে চরম হতাশায় দেশ যখন নিপতিত, জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে যাওয়া যখন বাধাগ্রস্ত ঠিক তখনই জিয়াউর রহমান জনগণের নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন। মিথ্যা প্রতিশ্রুতির অপরাজনীতি দ্বারা জনগণকে প্রতারিত করে স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীন মহল যখন মানুষের বাক-ব্যক্তি-স্বাধীনতাকে হরণ করে গণতন্ত্রকে মাটিচাপা দিয়েছিল, দেশকে ঠেলে দিয়েছিলো দুর্ভিক্ষের করাল গ্রাসে, বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আন্তর্জাতিক খেতাবপ্রাপ্ত হতে হয়, জাতির এরকম এক চরম দুঃসময়ে ৭ নভেম্বর সৈনিক-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে শহীদ জিয়া ক্ষমতার হাল ধরেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শহীদ জিয়া ক্ষমতায় এসেই মানুষের হারানো অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন, নিশ্চিত করেন মানুষের বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। উৎপাদনের রাজনীতি প্রবর্তন করে তিনি দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলতে সক্ষম হন। বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন দেশে উন্নীত করেন। তাঁর ‘বহুমত এবং পথের লালন ও পরিচর্যা’ এবং দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে মর্যাদার আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘শহীদ জিয়া ছিলেন আধিপত্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এক আপোষহীন দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক। তাই সকল ধরনের বৈদেশিক চাপ ও অশুভ প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টাকে অগ্রাহ্য করে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ শহীদ জিয়ার এক অবিস্মরণীয় অবদান। যার কারণে দেশের সার্বভৌমত্ব শক্তিশালী হয় এবং স্বাধীন জাতি হিসাবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভূমিকা বিশেষ গুরুত্ব লাভ করে। তাই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা নিজেদের নীলনকশা বাস্তবায়নের কাঁটা ভেবে জিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কিন্তু তাঁর এই আত্মত্যাগে জনগণের মধ্যে গড়ে উঠেছে দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে এক ইস্পাতকঠিন গণঐক্য। শহীদ জিয়ার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শনেই আমাদের জাতিসত্ত্বার সঠিক স্বরূপটি আবিস্কৃত হয়-যা আমাদের ভৌগলিক জাতিসত্ত্বার সুনির্দিষ্ট পরিচয় দান করে। বিশ্ব মানচিত্রে আমাদের আত্মপরিচয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠে। ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখারও সাহসী অঙ্গীকার। শহীদ জিয়ার জন্মদিনে তাঁর প্রদর্শিত পথেই আধিপত্যবাদের ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে জনগণের ঘাড়ে চেপে বসা বর্তমান ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাভূত করতে হবে।’
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ