নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত সকল স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির দাবিতে অষ্টম দিনের মত অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। তীব্র শীত অার অনাহারে অান্দোলনে যোগ দেয়া অধিকাংশ শিক্ষকই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ পর্যন্ত ১৮৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে, তাদের এই ‘ন্যায্য’ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, অাজ ১৬ দিন হলো অামরা রাস্তায় পড়ে অাছি। একে একে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি। সরকার কি অামাদের দেখছে না। তিনি বলেন, অামরা প্রধানমন্ত্রী অাশ্বাস ছাড়া অনশন ভাঙবো না। মরে বাড়ি ফিরবো। কিন্তু বেতন না নিয়ে বাড়ি ফিরবো না।
বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির মহাসচিব কাজী মখলেছুর রহমান বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কোনো কথায় আর আশ্বস্থ না। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ঘোষণা শুনতে চাই। অন্যথায় আমরা অনশন চালিয়ে যাবো।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, একই পরিপত্রে ১৯৯৪ সালে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ করা হয় ৫০০ টাকা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী ৫ম শ্রেণির কার্যক্রম একই হলেও ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে সরকার। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি মাসে ২২ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেতন হলেও ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা সরকারের থেকে কোনো বেতন পান না।
এদিকে, শিক্ষকরা অার অাগের মত স্লোগান দিয়ে অান্দোলন করেন না। সবাই অসুস্থ হয়ে দিন রাত শুধু শুয়ে থাকেন। এখন সবার মুখে একটাই প্রশ্ন অার কত দিন না খেয়ে রাস্তায় ঘুমালে তারা বেতন পাবেন। পরিবার পরিজনের কাছে ফিরে যেতে পারবেন?
‘বেতন দাও নইলে ভাত দে, মো গো বেতন নইলে বিষ,’ ‘বেতনবঞ্চিত ৩২ বছর, হামরা খুব কষ্টে আছি’, ‘চাকরি আছে বেতন নাই, এমন কোনো দেশ নাই’, এ ধরনের নানা স্লোগানের প্ল্যাকার্ড হাতে দাবি পূরণের পক্ষে অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন সারাদেশ থেকে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
প্রসঙ্গত, জাতীয়করণের দাবিতে গত পয়লা জানুয়ারি সোমবার থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকরা।
এরপর গত ৯ জানুয়ারি থেকে তারা আমরণ অনশন পালন করছেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ