দৈনিক দেশজনতা ডেস্ক :
খুলনা জোনে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রিত মোট নয়টি পাটকলের মধ্যে সাতটিতে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা মূল্যের উৎপাদিত পণ্য অবিক্রীত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এর পেছনে বিজেএমসির অদক্ষতাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, সরকারি পাটকলগুলোকে লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে বিজেএমসির দক্ষতা বাড়াতে হবে ও প্রশাসনিক জটিলতা দূর করতে হবে।
ক্রিসেন্ট জুট মিলস লিমিটেডের প্রকল্প প্রধান একে হাজারী বলেন, উৎপাদিত পণ্য বিক্রি না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সংকটে ভুগছে। সরকার পাটের মোড়ক ও ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করছে। এছাড়া পাটপণ্য বিদেশে রফতানির চেষ্টা করা হচ্ছে। ক্রিসেন্ট মিলে প্রায় ৪০ কোটি টাকার উৎপাদিত পণ্য মজুদ রয়েছে, যেগুলো সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এগুলো বিক্রি করতে পারলে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ করা সম্ভব হবে।
স্টার জুট মিলস লিমিটেডের প্রকল্পপ্রধান সুভেন্দ্র কুমার ঘোষ জানান, এ কারখানায় প্রায় ২৬ কোটি টাকার পণ্য অবিক্রীত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গুদামে সংকুলান না হওয়ায় এখন উৎপাদিত পণ্য ফ্লোরে রাখা হচ্ছে। তার মতে, পণ্য বিক্রি না হওয়ার পেছনে দুটি কারণ রয়েছে। এগুলো হলো— বিজেএমসির মার্কেটিং বিভাগ বিদেশী ক্রেতা টানতে না পারা ও ব্যবসার মন্দাভাব। সাধারণত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পাটপণ্য বিকিকিনিতে মন্দাভাব থাকে। জুনের পর এ অবস্থার উত্তরণ হবে বলে তিনি মনে করেন।
মিলটির অর্থ ও হিসাব বিভাগের প্রধান প্রশান্ত কুমার নন্দী বলেন, এ কারখানায় প্রায় ৬ কোটি টাকার পণ্য অবিক্রীত অবস্থায় গুদামে পড়ে রয়েছে। পাটপণ্যের চাহিদা এখন কম বলে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে না। এছাড়া এ মুহূর্তে ভারতে পাটপণ্য রফতানি করা যাচ্ছে না।
যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (জেজেআই) প্রকল্প প্রধান আহসান কবির জানান, মিলটিতে অবিক্রীত রয়েছে প্রায় ১৮ কোটি টাকার পাটপণ্য। এগুলো বিক্রি করতে না পারায় আর্থিক সংকট তৈরি হয়েছে। আর অর্থের অভাবে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। শুল্ক জটিলতার কারণে ভারতীয় বাজারে পাটপণ্য রফতানিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
খুলনা-যশোর অঞ্চলে বিজেএমসি নিয়ন্ত্রিত অন্য পাটকলগুলোর মধ্যে কার্পেটিং জুট মিলস লিমিটেডে পণ্য অবিক্রীত রয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকার। প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলস লিমিটেড ও আলীম জুট মিলস লিমিটেডের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ যথাক্রমে প্রায় ৪০ কোটি ও ৬ কোটি টাকা।
ক্রিসেন্ট জুট মিলসের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন বলেন, উৎপাদিত পাটপণ্য রফতানির ক্ষেত্রে বিজেএমসি অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। তারা বিদেশে বাজার ধরে রাখতে পারছে না। ফলে এ জোনের প্রতিটি মিলের গুদামে কোটি কোটি টাকার পাটপণ্য পড়ে রয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা/এমএম