নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবশেষে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের আমির ও দিল্লির মুরুব্বি মাওলানা সা’দ কান্ধলভী দেশে ফিরে গেলেন। তিনি শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেড এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দিল্লির উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। বিমানবন্দর থানার ওসি এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাওলানা সা’দ জেড এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করেন।’
এর আগে গতকাল শুক্রবার কাকরাইল মসজিদে মাওলানা সা’দ জুমার বয়ান দেন এবং নামাজ পড়ান। বয়ানে তিনি হযরত মুসা (আ.)-কে নিয়ে ছাড়াও তার অতীতে দেওয়া বক্তব্যের জন্য ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চান।
উর্দুতে দেওয়া বয়ানে মাওলানা সা’দ বলেন, ‘ওলামায়ে-কেরাম যদি কোনো কারণে ভুল ধরেন, আমরা মনে করব- ওনারা আমাদের ওপর এহসান করেছেন। তারা যে কথা বলবেন, তাতে আমাদের সংশোধন হবে ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কাজ হলো বয়ান করা। বয়ানে অনেক সময় ভুল হয়ে যায়। আমি সবার সামনে রুজু করেছি। কোনো কথায় যদি দোষ হয়, এটা থেকে আমি রুজু করতেছি, আগেও করেছি, এখনো করছি।’ টঙ্গীর তুরাগ তীরে গত ১২ জানুয়ারি থেকে তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। আখেরি মোনাজাত হবে আগামীকাল রোববার।
ইজতেমার ‘শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে’ গত ৭ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ীতে জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ায় তাবলিগের শুরা সদস্য ও আলেমদের বৈঠক হয়। সেখানে এবারের ইজতেমায় মাওলানা সা’দ এর না আসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
‘তাবলিগ করা ছাড়া কেউ বেহেশতে যেতে পারবে না’ মূলত মাওলানা সা’দের এমন বক্তব্যের জের ধরে বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তার বিরুদ্ধে রাজধানীতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভের মধ্যেই ১০ জানুয়ারি মাওলানা সা’দ বিমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। পরে তাকে পুলিশ পাহারায় কাকরাইল মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর পরের দিন বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে তাবলিগ জামাতের দু’পক্ষের বৈঠকে সমঝোতা হয়। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এবারের ইজতেমায় মাওলানা সা’দ অংশ নিবেন না। তিনি সুবিধা মত সময়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।
উল্লেখ্য, ভারতের দিল্লির মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী (রহ.) ১৯২০ সালের দিকে তাবলিগ জামাতের সূচনা করেন। এর মূল মারকাজ দিল্লিতে। মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর মৃত্যুর পর তার ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ নেতৃত্বে আসেন। তার মৃত্যুর পর সম্প্রতি ইউসুফের ছেলে মাওলানা সা’দ কান্ধলভী আমির হন।
তিনি ১৯৮৯ সাল থেকে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় আসা শুরু করলেও বয়ান শুরু করেন ১৯৯৬ সাল থেকে। আর গত দুই বছর তিনি আম বয়ানের পাশাপাশি আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ