দৈনিক দেশজনতা ডেস্ক:
বাংলাদেশ ভ্রমণে মার্কিন নাগরিকদের বাড়তি সতর্ক থাকার জন্য আবারো পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ নানা অপরাধমূলক ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নির্দেশিকায় বাংলাদেশকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, যদিও কোনোরকম অঘটন ছাড়াই বাংলাদেশে কয়েক হাজার মার্কিন নাগরিক প্রতিবছর ভ্রমণ করে থাকেন, কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু সন্ত্রাসী ঘটনার কারণে দেশটিতে বসবাসকারী বা ভ্রমণকারী মার্কিন নাগরিকদের বাড়তি সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভ্রমণের সময় মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বন করার উপদেশ দেওয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী ভারতকেও একই শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে।
গ্রাহকবান্ধব নতুন ভ্রমণ নির্দেশিকায় দেশগুলোকে চার ভাগে ভাগ করে ভ্রমণের জন্য আলাদা উপদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে লেভেল ২ এ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণের সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে পাকিস্তানকে লেভেল ৩ এ রাখার মাধ্যমে দেশটিতে ভ্রমণের বিষয়টিই পুনর্বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। লেভেল ১ ভুক্ত দেশগুলোতে চলাচলে কোনো বিধিনিষেধ নেই। আর লেভেল ৪ ভুক্ত দেশগুলোতে ভ্রমণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। আফিগানিস্তানকে লেভেল ৪ ভুক্ত দেশের তালিকায় রাখা হয়েছে।
কর্মকর্তারা আরো বলেন, এখন বেশিরভাগ দেশেরই এমন ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। আগের সব ভ্রমণ নির্দেশিকা নতুন পদ্ধতিতে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘এ পদ্ধতিতে মার্কিন নাগরিকদের স্বচ্ছ, সময়োপযোগী ও বিশ্বস্ত নিরাপত্তার পাশাপাশি নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য দেওয়া হচ্ছে।’
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, ‘অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।’ এ ছাড়া দেশটির নাগরিকদের বাংলাদেশের ঢাকা ও দক্ষিণ-পূব অঞ্চলের চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে ভ্রমণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে সশস্ত্র ডাকাতি, হামলা ও ধর্ষণের মতো সহিংস অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে বলেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশে সম্ভাব্য হামলার পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। তারা সামান্য বা কোনো হুমকি না দিয়েই হামলা চালাতে পারে। তারা পর্যটন এলাকা, যোগাযোগ কেন্দ্র, বাজার বা শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, মন্দির ও স্থানীয় সরকারি অফিসগুলোতে হামলা চালাতে পারে বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, দেশটির শহরাঞ্চলে ব্যাপক পুলিশ উপস্থিতি থাকা সত্বেও সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, যখন পুরো ভ্রমণ নির্দেশিকা প্রস্তুত করা হবে তখন বিভিন্ন দেশের বিশেষ বিশেষ স্থানকে আলাদা লেভেলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এর আগে ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকাস্থ দূতাবাস মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। বাংলাদেশে বিদেশি নাগরিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার হামলার আশঙ্কা রয়েছে- এই তথ্য জানিয়ে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ডও তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিল।
ওই সময় দুইজন বিদেশি নাগরিকের হত্যাকাণ্ড, শিয়া মুসলিমদের সমাবেশে বোমা হামলা এবং নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে ওই সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ সফর বাতিল করেছিল অস্ট্রেলিয়া।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ