নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে নজরদারি বাড়ায় কক্সবাজার সীমান্তে ইয়াবা পাচার কিছুদিনের জন্য কমলেও এখন আবার বেড়েছে। সম্প্রতি দুই দিনে ৪২ কোটি টাকার ইয়াবার চালান আটক করেছেন বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা। অভিযানে বড় বড় ইয়াবার চালান আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে এর সঙ্গে জড়িত গডফাদার ও তালিকাভুক্ত ইয়াবা বিক্রেতারা।
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত। সড়ক ও আকাশপথে নজরদারি বাড়ানোয় এখন ইয়াবা পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে সাগরপথ ব্যবহার করছে চোরাচালানিরা।
এসব সীমান্তের সড়ক ও নৌ-রুটে সমানতালে মিয়ানমার থেকে আসছে বড় বড় ইয়াবার চালান। গত শুক্র ও শনিবার টেকনাফ ও কক্সবাজার শহরের বঙ্গোপসাগরের মোহনা থেকে বিজিবি ও র্যাবের পৃথক অভিযানে ১২ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার হয়। এগুলোর মূল্য ৪২ কোটি টাকার বেশি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যেও নতুন নতুন কৌশলে মিয়ানমার থেকে বড় বড় ইয়াবার চালান দেশে আনছে গডফাদাররা। কখনো কখনো পাচারকারীরা আটক হলেও বেশির ভাগ চালান উখিয়া-টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
টেকনাফের সাবরাং উপকূল থেকে শনিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে ২২ কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যের ৭ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবা আটক করে বিজিবির সদস্যরা। তবে আটক করা যায়নি পাচারকারীদের।
এর আগে গত শুক্রবার ভোরে বঙ্গপোসাগরের কক্সবাজার চ্যানেলের গভীর সমুদ্র থেকে পাঁচ লাখ ইয়াবাসহ আট মাঝি-মাল্লাকে আটক করে র্যাব-৭। জব্দ করা হয় একটি ফিশিংবোট।
তবে বিভিন্ন অভিযানে ইয়াবা উদ্ধার হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পাচারের সঙ্গে জড়িতরা পালিয়ে যায়। আবার অনেক সময় ইয়াবা বহনকারীরা আটক হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে গডফাদাররা। কখনো কখনো গডফাদাররা আটক হয় বটে, কিন্তু আইনের ফাঁক-ফোকর গলে আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে যায়তারা। ফের জড়িয়ে পড়ে ইয়াবা পাচারে।
কঠোর নজরদারির মাঝেও ইয়াবা পাচার নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। নৌ-বাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক থাকলেও নিত্যনতুন কৌশলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পলিথিন মুড়িয়ে ইয়াবা পাচার করছে চোরাচালানিরা। ইয়াবা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. রুহুল আমিন। কোম্পানি কমান্ডার জানান, ইয়াবাসহ সব মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িতরা যত প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজ্জুল হক টুটুল বলেন, ইয়াবাকে জিরো টলারেন্স হিসেবে মাথায় রেখে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ