নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঝালকাঠি জেলার ৪ টি উপজেলায় ১৩০ টি করাত কলের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন রয়েছে ২৪ টির। বাকি ১০৬ টি করাত কলের লাইসেন্স না থাকায় এখন এক প্রকারে অবৈধভাবেই চলছে এসব করাত কল। করাত কল মালিক সমিতির সঙ্গে বন বিভাগের সমঝোতা না থাকায় লাইসেন্সবিহীন এসব করাতকল চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জেলা করাতকল মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, ঝালকাঠি জেলায় ১৭৩ টি করাত কল থাকলেও আমাদের সমিতির অন্তর্ভূক্ত রয়েছে ৯২ টি। আমরা করাত করের মলিকগন বিগত বছরে করাত লাইসেন্স বিধিমালা ১৯৯৮ অনুসারে করাত কল পরিচালনার জন্য সরকারের দেয়া লাইসেন্স গ্রহণ করে আসছি। কিন্তু বনবিভাগ এবং উপজেলা ভূমি অফিস আমাদেরকে বিভিন্ন কায়দায় বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে যার কারনে আমরা করাত কল মালিকগন নানাবিধ সমস্যার সম্মূখিন হচ্ছি। ২০১২ সালের সালের গেজেট অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণে বাধ্য-বাধকতা না থাকা সত্তে¡ও আমাদের কাছ থেকে সেই ছাড়পত্র চাওয়া হয়। এসব প্রক্রিয়ার কারনে করাত কল মালিকরা হয়রানি স্বীকার ও শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে করাত কল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। যার ফলে করাত কল মালিক-শ্রমিক অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের বিধিমালা ২০১২ এর পরিবেশ ছাড়পত্রের কথা উল্লেখ না থকলেও কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে অহেতুক হযরানী করছে। আমাদের লাইসেন্স নবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কোন হয়রানী না করার জন্যও আহব্বান জানান তিনি। শনিবার দুপুরে ঝালকাঠির কাঠপট্টিস্থ জেলা করাত কল মালিক সমিতির কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ খান সাইফুল্লাহ পনির। করাত কল মালিক মোঃ রুবেল খানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বনকর্মকতা মোঃ জিয়াউল ইসলাম বাকলাই, সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ শাহজাহান সিকদার, কল মালিক হারুন সিকদার, মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ সৈয়জউদ্দিন, আঃ হক তালুকদার, মোঃ মজিবুর রহমান, মোঃ হানিফ, মোঃ শফিউল রহমান মুসা, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। বনবিভাগ সুত্রে জানাগেছে, ৭(১)(খ) ধারায় কোন সরকারী অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান এবং জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর, বিঘœ সৃষ্টিকরে এসকল এলাকার ২০০ মিটারের মধ্যে করাতকল নির্মাণ দন্ডনীয় অপরাধ বলে উল্লেখ রয়েছে। জেলার সদরে ৩৫ টির ৪টি, রাজাপুরে ২৫ টির ৭টি, কাঠালিয়ায় ২৬ টির ৯ টি এবং নলছিটিতে ৪৪ টির ৪ টি করাত কলের অনুমোদন (লাইসেন্স) রয়েছে বলে বনবিভাগ সুত্র জানিয়েছে। সদর উপজেলা বন কর্মকর্তা মোঃ জিয়াউল ইসলাম জানান, অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তাই সবাই এখন লাইসেন্স নবায়নের প্রতি আগ্রহ হচ্ছে এবং অনেকগুলো প্রক্রিয়াধীনও রয়েছে। অভিযোগ যে যাই করুক নিয়মানুযায়ী লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। এসময় উপস্থিতিদের আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনিরকে জেলা করাত কল মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা করা হয়।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ