১৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ ইং | ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:০৮

ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র শীতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

কুয়াশায় ঢাকা চারদিক, তার উপর হিমেল হাওয়া সবমিলে ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের তীব্রতা প্রকট হয়ে উঠেছে। পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও উত্তরের সর্বশেষ জেলা হওয়ায় এখানে শীতের তীব্রতা প্রতিবছরই বেশি হয়। গত সোমবার থেকে এখানে সারাদিনেও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। তার উপর হিমেল হাওয়ায় শীতের দাপট বেড়ে গেছে। বর্তমানে বাতাসের আর্দ্রতা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ওঠানামা করায় শীতের তীব্রতা দিনদিন বাড়ছে।

সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত চারদিক কুয়াশার ঢাকা পড়ছে। রাতে বৃষ্টির মতো ঝিরঝির করে কুয়াশা ঝরছে। প্রচণ্ড শীতে শীতার্ত মানুষ চটের বস্তা কাঁথা হিসেবে ব্যবহার করে রাত পার করছেন। সকাল হতেই তারা সন্তান পরিজন নিয়ে আগুনের তাপ নিয়ে শরীর গরম করতে ব্যস্ত থাকে। নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে পারছে না। শ্রমিক শ্রেণির এসব মানুষ সন্তান-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। বেশিরভাগ যানবাহন দিনের বেলাতেও হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঘনিমহেশপুর গ্রামের বাসিন্দা সীতারাম বর্মণ বলেন, ২/৩ দিন ধরে বহছে পুরিয়াই বাতাস। তার রাইতত ঝিরঝির করে কুয়াশা ঝরেছে। এই কারণে ঠান্ডা বাড়ি গেছে। একই গ্রামের রসো বালা বলেন, স্বামী নাই। বেটা খাছে আলাদা। গরম কাপড় কিনে দেওয়ার লোক নাই। ঐতানে এই জারত কষ্ট কোরবা লাগছে।

এদিকে শীতার্তদের বাঁচাতে জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে ৫০ হাজার কম্বলের চাহিদা জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ২১ হাজার এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২ দফায় ১৩ হাজার ১৭৭টি কম্বল পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত কম্বল ইতোমধ্যে জেলার ৫ উপজেলা ও ৩ পৌর এলাকায় জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে অসহায় দরিদ্র ও শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। বাকি কম্বল চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাঝে বিতরণের জন্য দেওয়া হলেও তারা পড়ছেন বিপদে।

১নং রুহিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল হক বাবু জানান, আমাদের ভাগের কম্বল এবার সরকার রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরণ করায় আমাদের বরাদ্দ কমে গেছে। তিনি আরো জানান, একটি ইউনিয়নে যে বরাদ্দ পাওয়া যায়, তার তুলনায় শীতার্ত অসহায় মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে আমরা গরীব ও বৃদ্ধদের মাঝে কম্বল বিতরণ করে থাকি। লোকের তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় আমরা পদে পদে বিপদগ্রস্ত হচ্ছি। এ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জহুরুল ইসলাম  জানান, জেলার শীতার্ত মানুষের সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মোট ৩৪ হাজার ১৭৭ পিস কম্বল পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত কম্বল ইতোমধ্যে জেলার ৫ উপজেলা ও ৩ পৌর এলাকায় জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে অসহায় দরিদ্র ও শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি 

প্রকাশ :জানুয়ারি ৪, ২০১৮ ৩:৩৭ অপরাহ্ণ