দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক:
প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়া, টোঙ্গা, কিরিবাতিতে শুরু হয় ২০১৮ সালের প্রথম যাত্রা উৎসব। এ তিনটি দেশের মানুষ সবার আগে বরণ করে নতুন বছরকে।ঘূর্ণিঝড় ডিলানের প্রচণ্ড বাতাস ও ভারি বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে যুক্তরাজ্যে নতুন বছরের সূচনা ঘটল। আয়ারল্যাণ্ড, ওয়েলসসহ যুক্তরাজ্যের বড় অংশ এখন ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত। এরমধ্যেও নতুন বছরকে ঘিরে কমতি নেই ব্রিটিশ নাগরিকদের। মধ্যরাতের লন্ডন শহর হয়ে ওঠে উৎসবপ্রিয় মানুষের বিনোদনকেন্দ্র।
একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কবাসীরা পালন করছে তীব্র ঠাণ্ডা ও শীতে মোড়ানো নতুন বছরের শুরুর মূহুর্ত। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ও হাতে হাত রেখে উষ্ণতা ছড়িয়ে টাইম স্কয়ারে জড়ো হয়েছে উদযাপনকারীরা। তবে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যেও থেমে নেই নববর্ষকে বরণ করে নেয়ার হৈহুল্লোড়। অতিরিক্ত ঠাণ্ডার কারণে এলকোহল থেকে দূরে থাকতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে সেখানে। অতিরিক্ত এলকোহল গ্রহণ শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য নষ্ট করে দিয়ে মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে যে কোন মূহুর্তে, যার কারণে নববর্ষ উদযাপনে এবারে মদ পানীয়কে এড়িয়ে চলতে বলেছে কর্তৃপক্ষ।
বরাবরের মতোই ঝাঁকঝমকপূর্ণ আলোর কারসাজি ও আতশবাজি দিয়ে হংকং এ নতুন বছর শুরু হল। ঘড়ির কাটা বারোটা ছুঁতেই আনন্দের উম্মাদনায় ভেসে যায় হংকংবাসী। এখানকার নববর্ষ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতাকে ঘিরে সমাগম হয়েছিল প্রচুর পর্যটকের। বেইজিং-এ চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং’র বিবৃতি প্রচারের মাধ্যমে শুরু হয় নতুন বছর। ২০১৮ সালকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ১৯তম জাতীয় কংগ্রেসের লক্ষ্য বাস্তবায়নের বছর হিসেবে ঘোষণা করলেন তিনি। সেইসাথে ২০২০ সালের মধ্যে প্রান্তিক শ্রমিকদের দারিদ্রতা দূর করার সংকল্প করলেন তিনি। চীনের ঐতিহ্যবাহী আতশবাজি প্রদর্শণের মাধ্যমে বেইজিং আলোকিত হয়ে ওঠে। কয়েক হাজার বছর পূর্বে তাং সাম্রাজ্যের প্রচলন করা এই আতশবাজি উৎসব উপভোগ করতে মধ্যরাতে নেমে আসে হাজার হাজার লোক।
মৌসুমের প্রথম তুষারপাতের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার প্রস্তুতি শুরু করে টোকিওবাসী।
যুক্তরাষ্ট্রের ৩ ঘণ্টা পর এখানে ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছোঁয়। শহরের বিভিন্ন স্থানে উৎসব পালনকারীদের সাথে নেমে এসেছিলেন সেলিব্রেটি শিল্পীরাও। টোকিও পার্ক থেকে উড়িয়ে দেয়া হয় হাজার হাজার রঙবেরঙ্গের বেলুন। ইয়োকোহামার সাগরপাড়ে চলে আতশবাজির প্রদর্শনী। লন্ডনের এক ঘণ্টা পরে অস্ট্রেলিয়ার মানুষ নতুন বছরে পা দেয়। সন্ধ্যা থেকেই অস্ট্রেলিয়ার আকাশ আতাশবাজির আলোতে আলোকিত। প্রতি বছরের মতোই সিডনির বিখ্যাত অপেরা হাউজ হয়ে ওঠে আলোর ফোয়ারা। এখানকার মনোমুগ্ধকর আলো উৎসব দেখতে জড়ো হয় প্রায় ১৬ লাখ মানুষ। সিডনির মেয়র ক্লোভার মুর বলেন, বর্ণাঢ্য আয়োজনের কারণে সিডনি এখন বিশ্বের নববর্ষ উদযাপনের রাজধানী। সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রাযুক্তিক প্রক্রিয়ায় আতশবাজি ও আলোর কারসাজিতে মুগ্ধ হয় এখানে আগতরা।
লন্ডনের এক ঘণ্টা আগেই নিউজিলেন্ডে শুরু হয়ে যায় নতুন বছরের ক্যালেন্ডার। স্থানীয় সংগীত, নৃত্য দিয়ে এখানকার মানুষ বরণ করে নেয় ২০১৮ সালকে। শৃংখলা বজায় রাখতে অনেক শহরে নিষিদ্ধ করা হয় মধ্যপানকে। ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশে কাছাকাছি সময়ে নতুন বছর শুরু হয়। ভারতে বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তা নেমে আসে মধ্যরাতে। নেচে গেয়ে স্বাগত জানায় নতুন বছরকে। নেপাল হয়ে ওঠেছে পর্যটকপূর্ণ, এখানকার রেস্তোরাঁ, মদের বারে ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তানে শৃংখলা রক্ষার্থে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে পালিত হচ্ছে নতুন বছরের উদযাপন। সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াতেও কাছাকাছি সময়ে নববর্ষ উদযাপন করে মানুষ। আতশবাজি নিষিদ্ধ করা হয় থাইল্যান্ডে। পর্যটনকেন্দ্রিক হওয়ায় এসব দেশে নতুন বছর উপলক্ষ্যে জড়ো হয়েছে দেশ বিদেশের ভ্রমণপিপাসু অনেক মানুষ।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি