আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তবে দুবাইভিত্তিক আল আরাবিয়া তিনজন নিহতের কথা বলেছে। শনিবার তৃতীয় দিনের মতো দেশটির বেশ কয়েকটি শহরে বেকারত্ব ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ বিক্ষোভ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়। তবে একই দিন সরকারপন্থীরা দেশটির অন্তত ১২শ শহরে বিক্ষোভকারীদের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রথম দেশটির মাশহাদ শহরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রায় তিনশ লোক বিক্ষোভ করে। সেখান থেকে নিরাপত্তা বাহিনী ৫২ জনকে আটক করে। এরপর শুক্রবার সে বিক্ষোভ রাজধানী তেহরানসহ কাশান, আরাক, আহভাজ, যানজান, বন্দর আব্বাস ও কার্মান শহরে ছড়িয়ে পড়ে, যা শনিবারও অব্যাহত থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ছাড়া তারা সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। এ অবস্থায় দেশটির দরুদ শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। এতে দুইজনের মৃত্যু হয়। তবে আল আরাবিয়া সর্বশেষ অবস্থার কথা জানিয়ে এক প্রতিবেদনে বলেছে, লোয়েরস্টান প্রদেশের দরুদ শহরে রিভল্যুশনারি গার্ডের সদস্যদের গুলিতে অন্তত তিন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। সরকারবিরোধী ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে এতে বলা হয়েছে, রাতভর বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে।
খবরে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আহমাদি নেজাদের আমলের পর এই প্রথম এ ধরনের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটল। ইরানের সরকারি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, সরকারবিরোধীদের প্রতিবাদে এবং সরকারের সমর্থনে শনিবার দেশটির অন্তত ১২শ শহরে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ইরানের রিভল্যুশনারি গার্ডের উপ-প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কোসারি রাজধানী তেহরানে বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেইসঙ্গে অস্থিতিশীলতার চেষ্টা করা হলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি। কোসারি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে লোকজন রাস্তায় নামতেই পারে। কিন্তু তাই বলে এ রকম সরকারবিরোধী স্লোগান এবং সরকারি সম্পদ নষ্ট করতে পারে না।’
এদিকে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের আটক করায় ইরান সরকারের নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার তিনি টুইটারে বলেন, বিশ্ববাসী ইরানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তবে ট্রাম্পের এই সমালোচনার জবাবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি বলেছেন, ‘ট্রাম্প কিংবা তার প্রশাসনের এ ধরনের সমালোচনার কোনো মূল্য ইরানের জনগণের কাছে নেই।’
অন্যদিকে, ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল রেজা রাহমানি ফাজলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্ষোভ না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘লোকজনকে আমরা বেআইনি কোনো জমায়েতে অংশ না নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি তাদের কোনো জমায়েতের প্রয়োজন হয় তাহলে আগে অনুমতি নেওয়া উচিত।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি