২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:১৮

পাড়েরহাট মৎস্য বন্দরে শুঁটকি উৎপাদনে ব্যস্ত শ্রমিকরা

পিরোজপুর প্রতিনিধি:

দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম মৎস্য বন্দর পিরোজপুরের পাড়েরহাট। পাড়েরহাট মৎস্য বন্দর সংলগ্ন কচা নদীর তীরে প্রতিবছর মৌসুমের শুরুতেই শুঁটকি উৎপাদন শুরু হয়। শ্রমিকরা এখন শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি চলে তাদের এ কাজ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকের বাতাসে বইছে কাঁচা ও শুটকি মাছের গন্ধ। শ্রমিকেরা সবাই ব্যস্ত যে যার কাজে। কেউ বস্তাবন্দি করছে শুঁটকি মাছ। আবার কেউ কাঁচা মাছ কেটে কেটে রাখছেন মাচার উপরে। কেউ আবার মাচায় রাখা মাছ নেড়ে চেড়ে দিচ্ছেন শুকানোর জন্য। শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের এ দৃশ্য দেখতে অনেকে সকাল-বিকেল ভিড় করছেন কচা নদীর তীরে।

এই বন্দরের কয়েকটি মাচায় নিয়মিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুকানো হয়।  মৎস্য ব্যবসায়ীরা খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় শুঁটকি রফতানি করে থাকেন। এই মাছ চট্টগ্রাম থেকে রফতানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এমনকি বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাড়েরহাট মৎস্য বন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ী। তারা জানান, আমরা বঙ্গোপসাগর থেকে আহরিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এখানে শুকিয়ে শুঁটকি করে চট্টগ্রামে পাঠাই। সেখান থেকে বিদেশেও এই মাছ রফতানি করা হয়। শুঁটকি মাছ হিসেবে সাধারণত ছুরি, ঢেলা, মধু ফ্যাসশা, কাবিলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুকানো হয় এখানে।

শীত মৌসুমেই এসব প্রজাতির মাছ সাগরে ধরা পড়ে বেশি। তাই জেলেরা সাগর থেকে এসব মাছ ধরে এনে মৎস্য বন্দরে বিক্রির জন্য নিয়ে আসে। আর এখানকার ব্যবসায়ীরা জেলেদের কাছ থেকে মণ হিসেবে তাজা মাছ কিনে শুকিয়ে পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকেন। এ বিষয়ে শুঁটকি মাচার নিয়মিত কয়েক শ্রমিক আ. হাই কাজী, বাদশা ও শাহীনের সঙ্গে কথা আলাপকালে জানান, পাড়েরহাটে মাছ শুকানোর মত নেই কোনো উচু ভূমি। নেই ভালো কোনো মাচাও। তাই পাড়েরহাট বন্দরের কচা নদী সংলগ্ন চরে নিজেরাই কোনভাবে বালি দিয়ে উচু করে নিয়েছে কিছু জায়গা। তার উপরেই বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে শুঁটকির মাচা।

যেখানে অল্প জোয়ারেই পানি উঠে যায়। আর সেই মাচার কাছে যাওয়ার মত নেই কোনো রাস্তাও। আবার শুঁটকির মাচা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে গিয়ে ট্রাকে শুঁটকি উঠাতে হয়। তাই জোয়ার এলে চরম বিপাকে পড়তে হয় এই শুঁটকি ব্যবসায়ীদের। পাড়েরহাটে অন্তত ডজনখানেক শুঁটকি ব্যবসায়ী রয়েছেন। যারা নিজ উদ্যোগেই ব্যবসাটি চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে। তাই সরকারি সহযোগিতা কামনা করছেন এখানকার শুঁটকি ব্যবসায়ীরা। পাড়েরহাট ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার বাবুল বলেন, পাড়েরহাটে শুঁটকি উৎপাদনের প্রসারতা প্রতিবছর বৃদ্ধি পেলেও শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে এখানে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭ ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ