নিজস্ব প্রতিবেদক:
বেতন বৈষ্যম নিরসনের দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা বিগত তিন দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন করছেন।বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের আহ্বানে এ কর্মসূচি পালন করছেন কয়েক হাজার শিক্ষক। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম রবিউল মাইকে ঘোষণা দিচ্ছেন, সরকার দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত তারা আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমাদের বিপদে ফেলেছেন আমলারা। প্রধানমন্ত্রী এই সমস্যার কথা জানেন না। তিনি জানলে অনেক আগেই দাবি বাস্তবায়ন করতেন।’ অনশনের তিন দিনের মধ্যে চারবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক করেছেন শিক্ষক নেতারা। তবু তারা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাননি বলে জানান নূরে আলম। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের বেতন বাড়ানোর দরকার নেই। শুধু একবারের জন্য আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এসে আমাদের দেখে যান।’
এ সময় উপস্থিত সাতক্ষীরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিধান চন্দ্র বলেন, ‘জাতি গড়ার ফাউন্ডেশন আমরা। আমাদের মর্যাদা না দিলে কিভাবে উন্নত হবে জাতি।’ আরেক সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দিয়ে আমলারা জটিলতা সৃষ্টি করছেন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের সংগঠন ছিল না। প্রধান শিক্ষকদের সংগঠনের সঙ্গে তারা বিভিন্ন আন্দোলন করেছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা তাদের ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছেন।’
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, তাদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন প্রধান শিক্ষকরা। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের আহ্বানে গতকাল শনিবার থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন করছেন শিক্ষকেরা। এতে অংশ নিয়েছেন সারাদেশ থেকে আসা কয়েক হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। অনশনের তৃতীয় দিনে সোমবার ৪০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে ঘোষিত ৮ম জাতীয় পে-স্কেল অনুযায়ী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা (২য় শ্রেণি) ১১তম গ্রেড অর্থাৎ ১২ হাজার ৫০০ টাকা এবং প্রশিক্ষণ ছাড়া প্রধান শিক্ষকরা ১২তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন ১১ হাজার ৫০০ টাকা।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে অর্থাৎ ১০ হাজার ২০০ টাকা বেতন পাচ্ছেন আর প্রশিক্ষণ ছাড়া সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১৫তম গ্রেডে ৯ হাজার ৭০০ টাকা। কিন্তু, বর্তমানে নতুন স্কেলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেড এবং প্রশিক্ষণ ছাড়া প্রধান শিক্ষকরা পাবেন ১১তম গ্রেডে, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন।
সহকারী শিক্ষক, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও প্রশিক্ষণ ছাড়া প্রধান শিক্ষকরা যে বেতন পাবেন তার পরের ধাপে তারা বেতন চান। অর্থাৎ প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে বেতন চান সহকারী শিক্ষকরা।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ