পিরোজপুর প্রতিনিধি:
নিখোঁজ হওয়ার ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও খোঁজ মেলেনি কলেজছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস অন্তরার। এ কারণে চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে তার স্বজনরা। অন্তরা পিরোজপুর শহরের মুসলিম পাড়ার দুবাই প্রবাসী মফিদুল ইসলামের মেয়ে এবং পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের মেধাবী ছাত্রী। অন্তরা পিরোজপুর শহরের মুসলিম পাড়ায় মা ও বোনের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকত। নিখোঁজ অন্তরার পরিবার সাংবাদিকদের জানায়, গত ১৩ ডিসেম্বর বুধবার থেকে নিখোঁজ রয়েছে অন্তরা। ওই দিন অন্তরা সকাল সাড়ে আটটায় সরকারি মহিলা কলেজের নির্ধারিত পোশাক পরিধান করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য বাসা থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি। এ ঘটনার পর সন্ধ্যা নাগাদ অন্তরার ব্যবহার করা ফোন নাম্বার বন্ধ থাকায় স্বজনদের বাসা-বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ না পেয়ে সেদিন রাতেই পিরোজপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তার মা সাহিদা বেগম।
এদিকে ১৭ ডিসেম্বর রাতে নিখোঁজ ছাত্রীর মায়ের মোবাইল ফোনে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে দু’বার কল আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে কোনো কথা না বলে ফুঁপিয়ে কাঁদার শব্দ আসে। ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর শাহিদা বেগম কল করলে তা কেউ রিসিভ করেনি। পরদিন সে নম্বরটি পুলিশকে দিলে পুলিশ ফোনের সূত্র খুঁজতে গিয়ে জানতে পারেন ফোন নম্বরটি নাসির হোসেনের মা সখিনা বেগমের নামে নিবন্ধন করা। এরপর গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে তার মা শাহিদা ইয়াসমিন পিরোজপুর সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করলে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে শহরের পাল পাড়া এলাকার নাসির হোসেন (১৮) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করলে জেল হাজতে পাঠানো হয়। নাসির পিরোজপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাসিরের কাছ থেকে পুলিশ প্রথমে অনেক চেস্টা করেও এ ব্যাপারে কোনো রহস্য উৎঘাটন করতে পারেনি। শহরের বিভিন্ন স্থানে নিখোঁজের সন্ধান জানতে তল্লাশি চালানো হয়। তবে পরে কলেজ ছাত্রীকে অপহরণের সাথে একটি প্রভাবশালী চক্র জড়িত বলে নাসির পুলিশকে জানিয়েছে। বড় একটি চক্রের এক হোতার নামও বলেছে সে। আর সে অনুযায়ী পুলিশ চেষ্টা করে যাচ্ছে এর ক্লু বের করার। তবে নিখোঁজ হওয়া অন্তরা বর্তমানে কোথায়, কি অবস্থায় আছে এখনও তার কোনো সঠিক হদিজ পাননি পুলিশ। অন্তরার মা শাহিদা ইয়াসমিন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করবো না। মেয়েটিকে জীবিত ফেরত চাই। ওকে নিয়ে অনেক দূরে চলে যাবো।
এ ব্যাপারে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান বিশ্বাস বলেন, মেয়েটিকে উদ্ধারে অনুসন্ধান তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। নাসিরের দেওয়া তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। আশা করি আমরা নিখোঁজ ছাত্রীকে দ্রুত উদ্ধার করতে সক্ষম হবো। এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাম কবির বলেন, খুব শীঘ্রই আমরা মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পারবো। পুলিশের তরফ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

