ভোলা প্রতিনিধি :
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহাম্মেদ বলেছেন, শিক্ষা জাতীয়করণ হতেই হবে। এ প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন করতে হলে একটু সময়রে ব্যাপার মাত্র। বর্তমান সরকার দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে বর্তমানে শিক্ষকদের জন্য ১শ’ ২৩ ভাগ বেতন ভাতা বৃদ্ধি করেছে। যে প্রধান শিক্ষক ১০ বছর আগেও ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা বেতন পেতেন, তারা এখন ২৯ থেকে ৩০ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছেন। সামান্য কিছু দাবি দাওয়ার কারণে আপনারা আন্দোলন করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের এই সামান্য আবদারও বাস্তবায়ন করবেন। আগামী ৭ জানুয়ারী জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষনের পর আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আপনাদের পক্ষ হয়ে এই দাবী তুলে ধরবো। ইনশায়াল্লাহ এটাও বাস্তবায়ন হবে। গতকাল রবিবার দুপুর ১ টার সময় ভোলার বাংলাস্কুল মাঠের শিক্ষক সমাবেশে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহাম্মেদ প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আজকের এই সমাবেশে আমি রাজনৈতিক কোন বক্তব্য দিতে আসিনি। শিক্ষকরা আমার ছোট হলেও আমার কাছে খুব সম্মানিত ব্যাক্তিত্ব। স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যথন ভোলায় আসি, তখন আমি আমার এক শ্রদ্ধেয় শিক্ষককে সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম, তখন আগে স্যারের পা’ছুয়ে সম্মান জানাও এবং দোয়া নেও। সেই থেকে আজও আমি আমার শিক্ষাগুরুদের দেখলে পা’ছুয়ে কদমমুছি করে শ্রদ্ধাকরি তার পর দোয়া নেই।
কই গেলো আমার সেই সোনালী দিন। এই কথা বলে মন্ত্রী কেঁদে ফেলেন এবং তার শৈষব, কৈশর’র স্মৃতিকে সামনে এনে ভোলার শিক্ষক সমাজকে বলেন। রাজনীতি করতে এসেছি এদেশের জনগণের জন্য, যতদিন বেচে থাকবো ভোলার মানুষের জন্য কাজ করে যাব।
তিনি আরো বলেন, আমি যখন প্রথম নির্বাচন করি তখন কোন গাড়ী ছিলনা, ৯৭ ভাগ কুড়েঘর ছিল, ৯০ ভাগ মানুষ জুতা পায়ে দিতে পারতোনা। বিদ্যুত ছিলনা। আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মেধা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে দেশে কোন কুড়ে ঘর খুজে পাবেননা। ১’শত ভাগ মানুষ পায়ে জুতা পড়ে, আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে ভোলার প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌছে দেব। ২০১৯ সালের মধ্যে সারাদেশের মানুষ বিদ্যুত পাবে, কোন রাস্তাঘাট কাঁচা থাকবেনা।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন যুবলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ি কমিটির সদস্য এবং ভোলা-২ আসনের এমপি আলী আজম মুকুল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু, ভোলা পৌরসভার মেয়র মোঃ মনিরুজ্জামান মনির, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব প্রমূখ।
শিক্ষক নেতা মোঃ মোতাহার মিয়ার সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ভোলা’র সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শাহিন, ভাষা শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোঃ জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান) ভোলা সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ মীর আমির হোসেন, বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম ভোলার নেতা মোঃ সাইদুল হাসান সেলিম, আলতাজের রহমান কলেজের অধ্যক্ষ জাহান জেব আলম টিটু, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদাররেছিন ভোলা শাখার সভাপতি আব্দুল খালেক, সাধারণ উপধ্যক্ষ মাওলানা মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ভোলা শাখার সম্পাদক অধ্যক্ষ সাফিয়া খাতুন প্রমূখ। এসময় শিক্ষক নেতারা বেসরকারী শিক্ষকদের চাকুরী জাতীয়করণসহ বিভিন্ন বৈশম্য দুরীকরণসহ মন্ত্রীর কাছে নানান দাবী উপস্থাপন করেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ