২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:৪৭

সীমান্তে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের চেকপোস্ট বাড়ছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সীমান্ত দিয়ে অপরাধীদের যাতায়াত, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান এবং ক্ষতিকারক উপকরণ আমদানি বন্ধে পুলিশের চেকপোস্ট বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তিনি বলেন, দেশের ৪ হাজার ৭০০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকার ৩৩ জন সংসদ সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সীমান্ত দিয়ে অপরাধীদের যাতায়াত, অস্ত্র-মাদক চোরাচালানসহ এবং ক্ষতিকারক উপকরণ আমদানি বন্ধে পুলিশের চেকপোস্ট বাড়ানোর সাজেশন পেয়েছি। সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

রোববার দুপুরে পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরে সংসদ সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের ‘সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে কোনো মাদক তৈরি হয় না। মিয়ানমার ও ভারত থেকে বাংলাদেশে মাদক প্রবেশ করে। সীমান্ত দিয়ে যাতে মাদক প্রবেশ না করে সেজন্য সীমান্ত এলাকা আরো সুরক্ষিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

মাদক প্রবেশ ঠেকাতে সংসদ সদস্যদের সাজেশন চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, টেকনাফের বিভিন্ন পথ দিয়ে মাদক প্রবেশ করছে। সেটি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় যেসব পথ দিয়ে বৈধভাবে বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রফতানি হয় সে পথগুলো যেন ক্লিয়ার থাকে, সে আলোচনাও হয়েছে।

মাদক চোরাচালানে অনেক ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরাই জড়িত থাকেন এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যাদের বিরুদ্ধেই এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। জড়িত ব্যক্তি প্রশাসনেরই হোক কিংবা জনপ্রতিনিধিই হোক, তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাদক আইনে কিছু ফাঁকফোকর আছে যা সংশোধন করে যুগোপযোগী করে সংসদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যেন কোনো মাদক ব্যবসায়ী বা চোরাচালানিরা আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যেতে না পারে।

সীমান্ত হত্যা কমেছে, ভবিষ্যতে আরো কমবে:

ভারতের সঙ্গে আলোচনার ফলস্বরূপ দিন দিন সীমান্ত হত্যা কমে আসছে এবং এই সংখ্যা আরো কমবে বলে সংবাদ সম্মেলনে আশা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এর ফলে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড কমে এসেছে। আশা করছি ভবিষ্যতে এর সংখ্যা আরো কমে আসবে। সীমান্ত হত্যা যাতে পুরোপুরি বন্ধ করা যায় আমরা সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের পর থেকে ক্রমাগতভাবে সীমান্ত হত্যা কমে আসছে। ২০০৮ সালে ৬৮ জন, ২০০৯ সালে ৬৭ জন, ২০১০ সালে ৬০ জন, ২০১১ সালে ৩৯ জন করে ক্রমান্বয়ে এ সংখ্যা কমে চলতি বছরে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় দুই দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বজায় রয়েছে।

বিজিবিতে বাড়ছে ১৫ হাজার সদস্য:
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আরো শক্তিশালী করতে ১৫ হাজার নতুন সদস্য বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সীমান্তে বিজিবির চেকপোস্ট আরো বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

চোরাচালান বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, চরম কথাটি ঠিক নয়। বিজিবি-কোস্টগার্ড-পুলিশ-র্যা বের মধ্যে সমন্বয় আছে। সেই সমন্বয়টা আরো বাড়াতে হবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোস্টগার্ডকে আরো শক্তিশালী করতে দুটি জাহাজ সংযুক্ত করার পাশাপাশি আরো দুটি জাহাজ ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭ ৫:২৬ অপরাহ্ণ