নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিখোঁজ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বের হাসান সিজারকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঢাকার এয়ারপোর্ট রোডে চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। আজ সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি নিজেই একথা জানান। তিনি বলেন, অপহরণকারীরা আমাকে চোখ বেঁধে ফেলে রেখে যায়। এসময় তারা বলে চলে যান, পেছনে তাকাবেন না তাহলে মেরে ফেলবো।
মোবাশ্বের হাসান বলেন, এর পর তিনি সামনের দিকে এগোতে থাকেন। একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা থামিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। চালকের মোবাইল ফোন থেকে তিনি তাঁর বাবার নম্বরে কল করে ৫শ’ টাকা নিয়ে বাসার গেটে আসতে বলেন। এভাবেই বাসায় ফেরেন মোবাশ্বের হাসান।
গত ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকাল থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক মোবাশ্বার হাসান সিজারকে। ৭ নভেম্বর রাতে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় এ সংক্রান্ত এক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সিজারের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন। ৭ নভেম্বর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোবাশ্বার হাসান সিজার সরকারের এটুআই প্রকল্পের একটি সভায় অংশ নিতে আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনে যান। সেখান থেকে বের হওয়ার পরই নিখোঁজ হন।প্রসঙ্গত, মোবাশ্বার হাসান বছর খানেক আগে বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন। ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে তিনি স্নাতকোত্তর করেন। সে সময় তিনি বছর তিনেক একটি জাতীয় দৈনিক ও একটি অনলাইন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। এরপর তিনি যুক্তরাজ্যের ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কয়েক বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থানের পর তিনি ঢাকায় ফিরে আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফামে যোগ দেন। তিনি বছর দেড়েক সেখানে কাজ করার পর অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান এবং গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইসলামের প্রভাব কতটা ভূমিকা রাখছে, সেটি ছিল তাঁর পিএইচডি থিসিসের বিষয়বস্তু। অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে তিনি ঢাকার বেসরকারি ইউল্যাব ইউনিভার্সিটিতে মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করেন। প্রায় দুই বছর সেখানে কাজ করার পর তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ