নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর বনানীর একটি আবাসিক হোটেলে তরুণীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সংগীত শিল্পী আনুশেহ আনাদিলের ভাই কুশান ওমর সুফির বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা দায়ের করেছেন এক তরুণী। গত ১৩ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলার এজাহারে ওই তরুণী অভিযোগ করেছেন, কুশান ওমর সুফি তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন। কিন্তু বিয়ের বিষয়ে কথা বলতে গেলে বাসায় প্রবেশে নিষেধ করে তার পরিবারের সদস্যরা। শুধু তাই নয়, ক্যান্টনমেন্ট থানায় জিডি করার পর প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল অভিযুক্ত কুশান ও তার পরিবার। যে কোনো সময় অভিযুক্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী।
ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মতিন। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার জন্য ওই তরুণীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানকার রিপোর্ট আমরা এখনো হাতে পাইনি। তদন্তে ও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। মামলার এজাহারে ওই তরুণী অভিযোগ করেছেন, কুশান ওমর সুফির সঙ্গে প্রায় দেড় বছর আগে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায়ই কুশানের সঙ্গে তার বাসায় ও বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যেতেন। একপর্যায়ে বিয়ে করবে বলে কুশান তাকে বাসায় নিয়ে যায় এবং সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। গত জুন মাসে কুশান দেশের বাইরে যায় এবং সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ফিরে তাকে বিয়ে করার আশ্বাস দেয়। দেশে ফেরার পর গত ১৯ নভেম্বর তিনি কুশানের বাসায় যান বিয়ের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য। কিন্তু কুশানের বোন আনুশেহ আনাদিল (৪০) তাকে বাসায় প্রবেশ করতে নিষেধ করে। এ সময় কুশান তাকে আলোচনা করার জন্য বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়। একটি রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া শেষে ২০ নভেম্বর রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটে তাকে বনানী থানাধীন হোটেল সুইট ড্রিমের ৮০৫ নং রুমে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে বিয়ের বিষয়ে কথাবার্তা না বলে হঠাত্ করে কুশান তাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি ২০ নভেম্বর সকালে মোবাইল ফোনে বনানী থানায় জানালে থানার টহল টিম তাকেসহ কুশানকে থানায় নিয়ে যায় এবং অভিযোগ করার জন্যে আইনি পরামর্শ দেয়। খবর পেয়ে কুশান তার চাচা পাপ্পু সুফি থানায় আসেন। থানায় তরুণীর আত্মীয়, সাক্ষী শাহীন খান এবং কুশানের আত্মীয় পাপ্পু সুফি এবং নুর ইসলামের সামনে তার কাছে ক্ষমা চায় কুশান এবং পর দিন ২১ নভেম্বর তাকে বিয়ে করবে বলে সবার সামনে কথা দেয়। বিয়ের দিন ধার্য হওয়ায় তিনি ঘটনার বিষয়ে থানায় আর কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। ওই সময় সব সাক্ষীর সামনে লিখিত আপস মীমাংসা হয়।
আরো অভিযোগ করা হয়, ২১ নভেম্বর তিনি কুশানের বাসায় গেলে বোন আনুশেহ আনাদিল (৪০), বোনের স্বামী শেত পান্ডু ব্লুববার্গ (৪৩), আত্মীয় সাজলী (৪২) তাকে বাসায় প্রবেশে বাধা দেয় এবং মারধর ও হুমকি প্রদান করে তাড়িয়ে দেয়। মামলায় বলা হয়, ২৩ নভেম্বর ক্যান্টনমেন্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ৯৩৫) করেন ওই তরুণী। জিডিতে কুশান তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন। এ ছাড়া কুশান যে কোনো সময় দেশ ত্যাগ করতে পারে বলেও উল্লেখ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান ওই তরুণী।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি