নিজস্ব প্রতিবেদক:
শতাব্দীপ্রাচীন বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের হস্তক্ষেপে ভবন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কবল থেকে রক্ষা পেতে যাচ্ছে বিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িটি।
আগামী বছর ১২৫ বছর পূর্ণ হতে চলেছে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সংস্থার কাজ নানা দিকে প্রসারিত হয়েছে৷ উত্তর কলকাতায় আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডে পরিষদের সাবেক ভবনটিতে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় তারাশঙ্করের পাইকপাড়ার বাড়িটিতেই হতে চলেছে পরিষদের নতুন ও দ্বিতীয় ভবন৷
ইতিমধ্যে পরিষদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারাশঙ্করের উত্তরাধিকারীদের আলোচনা হয়েছে৷ মাস দুয়েকের মধ্যেই এই বাড়ি হস্তান্তরিত হতে পারে বলে পরিষদ জানিয়েছে৷
তারাশঙ্করের উত্তরাধিকারীদের পক্ষে ১২ কক্ষবিশিষ্ট তিনতলা বাড়িটি আর রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়৷ উত্তরাধিকারীরা একমত হয়ে বাড়িটি ভবন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷
এটা জানার পর লেখক-কবি-শিল্পী মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়৷ ১৯৪৮ সাল থেকে আমৃত্যু ওই বাড়িই ছিল কালজয়ী লেখকের ঠিকানা৷ সেই সময়ে বিশিষ্ট লেখক ও শিল্পীদের আনাগোনা ও আড্ডায় ওই বাড়ি হয়ে ওঠেছিল বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল কেন্দ্র৷ বাড়িটি রক্ষার শেষ চেষ্টা হিসাবে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কবি শঙ্খ ঘোষ।
তারাশঙ্করের সেই বাড়ির বর্তমান আইনত উত্তরাধিকারী মোট দশজন। তারাশঙ্করের বড় ছেলে সনত্বাবুর চতুর্থ পুত্র ও ইতিহাসের অবসরপ্রান্ত অধ্যাপক অমলশঙ্কর বলেন, ‘ইতিপূর্বে এই বাড়িটি আমরা পরিষদকে হস্তান্তর করতে চেয়েছিলাম৷ পরিষদের সঙ্গে যখন কথাবার্তা শুরু হয়, তখন পাঁচ কোটি রুপি চাওয়া হয়েছিল৷ এই বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষমতা আমাদের আর নেই৷ তাই বাধ্য হয়েই আমরা প্রোমোটারের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম৷ কিন্তু আমরা সবসময়ই চেয়েছি, এই বাড়ি যেন ধাত্রীদেবতা বা আরোগ্য নিকেতনের মতো ধ্রুপদী উপন্যাসের রচয়িতার স্মারক হিসাবে রক্ষা পায়।’ ওই বাড়িতে দেশি-বিদেশি গবেষকদের জন্য একটি হোস্টেলও বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে পরিষদ৷
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ