২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:০৭

জাবিতে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণ বিরোধী সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণ বিরোধী’ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়োজনে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ (২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর) ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ২০১৭ পালিত হচ্ছে। সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ‘যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোল; নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক মানবিক সমাজ, রাষ্ট্র গঠন কর’ এই আহ্বান জানিয়েছে।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘ধর্ষণ একটি মানবতা বিরোধী অপরাধ। এই অপরাধে নিপীড়ককে চিহ্নিত করে পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে বয়কট এবং আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এছাড়া ধর্ষণের শিকার নারীকে দায়ী করার মানসিকতা পরিহার করে তার প্রতি সংবেদনশীল হয়ে পাশে দাঁড়াতে হবে। ‘ এসময় তিনি সম্প্রতি মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বলেন, ‘আমরা অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে আছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হয়। অথচ নিজের সহপাঠীর সুযোগ নিয়ে ছাত্ররা গোপনে ছাত্রীদের বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছে। এই ছাত্ররা নিজেরাই বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করা উচিত।

সমাবেশে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আন্তর্জাতিক সম্পাদক রেখা সাহা বলেন, “বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে ভিশন ২০২১ এর দিকে। ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন করতে হলে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করতে হবে। জেন্ডার সমতা অর্জন ও নারীর ক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ অর্ধজনগোষ্ঠী হলো নারীসমাজ। সেই নারী সমাজ যদি নানা ধরনের বৈষম্যে ও সহিংসতার মধ্যে থাকে তাহলে আমরা পুরো জনগোষ্ঠীকে একটি উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাতে পারবো না। ” তিনি আরও বলেন, ‘যেদিন সমাজ ধর্ষিতাকে বয়কট না করে বরং যে ধর্ষণ করেছে তাকেই বয়কট করবে সেদিন পর্যন্ত আন্দোলন ও সংগ্রাম করতে চাই। এই সমাজে পুরুষদের যেমন ভূমিকা আছে নারীদেরও ঠিক সমান ভূমিকা রয়েছে। আসুন আমরা বৈষম্যহীন, সমতাপূর্ণ, গণতান্ত্রিক, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলদেশ গড়ে তুলি। ‘

সমাবেশে সাভার জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শাহানা জাহান সিদ্দিকার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রাশেদা আখতার, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামসুন্নাহার খানম, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির রেহানা ইউনুস, অ্যাডভোকেট মাকসুদা আখতার ও উম্মে সালমা বেগম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ১২ ছাত্রের বিরুদ্ধে মেসেঞ্জারের সিক্রেট গ্রুপে শিক্ষিকা ও সহপাঠীদের ছবি আপত্তিকরভাবে উপস্থাপনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় অধ্যাপক মো. হাসিবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। আগামী ১০ কার্যদিবসের (৮ ডিসেম্বর) মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :ডিসেম্বর ৬, ২০১৭ ৩:৫৩ অপরাহ্ণ