নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর পল্লবীতে পরকীয়ার জেরে স্বামী সেনাবাহিনীর সৈনিক মো. মহসীনকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী মোছা. সালেহা খাতুন শিউলীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বুধবার ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত সালেহা খাতুন চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলবের আইঠাদি মাথাভাঙ্গার সিরাজুল ইসলাম মাস্টারের মেয়ে।
বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, বর্তমান সমাজে পাষণ্ড স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হত্যার ঘটনা যেমন ঘটেছে, ঠিক তেমনিভাবে পাষণ্ড স্ত্রী কর্তৃক স্বামী হত্যার মত ঘটনাও অহরহ ঘটছে। দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকল্পে এ ধরনের মামলার আসামির উপযুক্ত বিচার হওয়া আবশ্যক। ফলে এই মামলায় আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া না হলে ধরনের নির্মম, নিষ্ঠুর হত্যার অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্তি দেয়া সম্ভব না। আসামি যে অপরাধ করেছে তা খুবই মর্মান্তিক, বিভীষিকাময়, নারকীয় এবং ভয়ংকর। এই অপরাধ সভ্য সমাজের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য ও সহনীয় নয়। তার অপরাধ বর্বরতা ও সভ্যতার সকল সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে।
মামলায় বলা হয়, সৈনিক মহসীন তার স্ত্রী সালেহা খাতুন এবং দুই ছেলে প্রান্ত ও প্রিয়ন্তকে নিয়ে পল্লবীতে স্থায়ীভাবে বাস করতেন। মহসীনের সাথে সংসার করাকালে সালেহা বিভিন্ন লোকজনের সাথে অবৈধ ও পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলে। যার ফলে তাদের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি লেগেই থাকতো।
২০১২ সালের ২৬ অক্টোবর সালেহা খাতুন শরীফ চৌধুরী আপন, সুরুজ মিয়াসহ ৫/৭ জনকে পরকীয়া প্রেমিকের সহায়তায় মহসীনের লিঙ্গ ও অন্ডকোষ পুরোটাই শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে। গলার শ্বাসনালী ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলে। এরপর তাকে সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় নিহতের ভাই মো. মজনু মিয়া বাদী হয়ে পল্লবী থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট থানার এসআই বিপ্লব কুমার শীল পরের বছরের ২১ জানুয়ারি সালেহা খাতুনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে আদালত সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। ঘটনার পর আসামি শিউলি গ্রেপ্তার হয় এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে পরবর্তীতে জামিনে গিয়ে পালিয়ে যায়।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ