নিজস্ব প্রতিবেদক:
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, চলতি ডিসেম্বর মাসেই হলি আর্টিজান মামলার চার্জশিট দেয়া হবে। রোববার দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, হলি আর্টিজান বেকারিতে গত বছরের হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত সোহেল মাহফুজ, রাজিব, রাশেদ, জাহাঙ্গীর ও রিগ্যানসহ মোট সাতজনকে জীবিত গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত বছরেরর ১ জুলাই হলি আর্টিজানে নৃশংস হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমরা এ বছরেই চার্জশিট দিতে চেয়েছিলাম। তবে কতিপয় আসামির বিরুদ্ধে আমাদের তথ্যের অভাব ছিল।
তিনি বলেন, হলি আর্টিজান হামলায় গুরুত্বপূর্ণ ৪ আসামির মধ্যে বাশারুজ্জামান চকলেট, ছোট মিজান ও তামিম চৌধুরী নিহত হয়েছেন। বাকি রয়েছেন সাগর। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। জড়িত আরও ৩ জনের নাম উঠে এসেছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, হলি আর্টিজান হামলার মামলার তদন্ত করতে গিয়ে আরও ৩ জনের নাম উঠে এসেছে। তারা হলেন, রিপন, খালিদ ও আকরাম হোসেন। এদের মধ্যে আকরাম হলি আর্টিজান ও পান্থপথের হোটেল অলিও এর হামলার পরিকল্পনায় অর্থদাতা। এই তিনজনকে গ্রেফতার করতে পারলে তদন্ত শেষ হবে। পলাতক থেকে রিপন, খালিদ হলি আর্টিজানে হামলায় সহযোগিতা করেছে। তারা হামলার পরিকল্পনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন। গ্রেফতার করা না গেলে তাদের পলাতক দেখিয়ে হলি আর্টিজান মামলার চার্জশিট এই মাসেই দেয়া হবে। হলি আর্টিজানের ঘটনায় জড়িত নিহতদের ঘটনার সঙ্গে দায়দায়িত্ব দেখিয়ে অব্যাহতি দেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সরকারকে বিপদে ফেলাই ছিল উদ্দেশ্য :
হলি আর্টিজান হামলায় আইএসের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। মূল মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী ও সারওয়ার জাহান ছিলেন অন্যতম সহযোগী। মেজর জাহিদও ছিলেন মাস্টারমাইন্ড। জড়িতরা সবাই নব্য জেএমবি’র। তদন্তে আইএসের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আইএস ও আল কায়েদার মতো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তাদের হামলার উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে বেকায়দায় ফেলানো।
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, হলি আর্টিজানসহ সকল হামলার পেছনে রাজনৈতিক চিন্তা রয়েছে। সন্ত্রাসবাদ মূলত একটি রাজনৈতিক মতবাদ। নব্য জেএমবি’র সদস্য হিসেবে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা অধিকাংশরাই জামায়াত-শিবিবের। তাদের উদ্দেশ্য দেশে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করা। রেজিস্টার্ড অনেক দল শরিয়া আইন চায়। তবে তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চায়। কিন্তু জঙ্গিরা সরাসরি কথিত জেহাদের মাধ্যমে শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করতে চায়। এ রকম একাধিক সংগঠন চায় দেশে শরিয়া আইন চালু হোক। পথ ভিন্ন হলেও লক্ষ্য তাদের এক।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ