নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের সখীপুরে একই পরিবারে ৫ প্রতিবন্ধীকে নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন গৃহকর্তা শহিদুল ইসলাম। ওই পরিবারে ৬ সদস্যের ৪ জনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের ছোট চওনা গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম জন্মগতভাবেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তিনি বিয়েও করেছেন ফিরোজা আক্তার নামের এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে। তাদের ঘরে জন্ম নেওয়া তিন পুত্র সন্তানদের মধ্যে সবুজ (১২) ও শরীফুল (৮) নামের দুই জন বাবা-মায়ের মতো জন্মগতভাবেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।
এদিকে শ্বশুর মারা যাওয়ার পর শাশুড়ি রাবিয়া বেগমকেও (৮০) দেখভাল করতে হচ্ছে শহিদুল ইসলামকে। রাবিয়াও এখন চোখে কম দেখেন। বয়সের ভারে একা চলাচল করতে পারেন না। কয়েক বছর আগে পড়ে গিয়ে দু’টি পা ভেঙে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। বিধবা, বয়স্ক কিংবা প্রতিবন্ধী কোনো ভাতাই এখনো কপালে জুটেনি তার।
শহিদুল ইসলাম জানান, তার পরিবারে এক মাত্র তিনিই মাসিক ৫/৬শ’ টাকা ভাতা পান। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই অন্ধ ছেলেদের নিয়ে মানুষের কাছে হাত পাততে রাস্তায় বের হতে হয়। শহিদুলের স্ত্রী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ফিরোজা আক্তার বলেন, বাবা মারা গেছে, মাকে তো ফেলে দিতে পারি না। অসুস্থ পঙ্গু মাকে ওষুধ কিনে দিতে পারি না। মায়ের নামে কোনো ভাতাও হয় নাই। তারপরও চেয়ে-চিন্তে এনে মাকে খাওয়াচ্ছি।
এ ব্যাপারে কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, ওই পরিবারের খোঁজ-খবর নিয়ে পর্যায়ক্রমে পাঁচ প্রতিবন্ধীকে ভাতার আওতায় আনা হবে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাদেরকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
সখীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ বলেন, একই পরিবারে একাধিক ব্যক্তি ভাতা পাবেন না। তারপরও সরকারি বিধি মোতাবেক ওই পরিবারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ