নিজস্ব প্রতিবেদক:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৬ নভেম্বর-৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এবছরও ভর্তি পরীক্ষার একমাত্র ভেন্যু হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নির্ধারিত হওয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে ২৫ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত একাডেমিক ক্লাস-পরীক্ষাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সময়ের মধ্যে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ ছাড়া আর কারও ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার থাকবে না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইবরাহীম কবীর।
এদিকে আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার ঘোষণায় চরম ভোগান্তীতে পড়েছে আবাসিক শিক্ষার্থীরা। হল বন্ধর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে শিক্ষার্থীরা। এতে বিপাকে পড়েছে ৩ হলের প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী। বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হাসান জানান, ৫ দিন হল বন্ধ রাখলে তাদের থাকা ও খাওয়ার বেশ সমস্যা হবে। আশপাশের মেসগুলোতে নিয়মিত শিক্ষার্থী ও ভুর্তিচ্ছুরা অবস্থান করবে। ফলে কোন মেসে থাকারও সুযোগ নেই। একই হলের আরেক শিক্ষার্থী মান্নান জানান, তার এলাকা থেকে ৩-৪ জন পরীক্ষার্থী আসবে। তারা তার কাছে থাকতে চেয়েছে। এখন তার নিজেরই থাকার জায়গা নেই সেখানে ভর্তিচ্ছু কোথায় থাকবে। একই হলের শিক্ষার্থী জামাল জানান, আগামী ২৯ নভেম্বর ৩৭তম বিসিএস এর ভাইভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় হল বন্ধ রাখলে তাদের পড়ালেখার ব্যাঘাত ঘটবে।
শহীদ হলের শিক্ষার্থী তাইজুল জানান, ৫ দিন হল বন্ধ থাকলে তার পক্ষে রংপুরে অবস্থান করা সম্ভব হবে না। এতে এই ৫ দিনের জন্য তাকে তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে থাকতে হবে। একই হলের শিক্ষার্থী আমিন জানান, ডিসেম্বরের শুরুতে তাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। এ সময় হল বন্ধ থাকলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের শিক্ষার্থী শারজানা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা একটি বড় উৎসবের মত। এসময় নিয়মিত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে না থাকতে পারাটা খুবই দু:খজনক।
তবে হল বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্বিবিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর জানান, ‘হল থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ইউজ করতে পারে। তাই হল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, পরীক্ষায় দুর্নীতির সাথে শিক্ষার্থীরা জড়িত নয়, বরং এর পেছনে কর্মকর্তা এবং দুয়েকজন শিক্ষকই জড়িত থাকে। কিন্তু হল তিনটি বন্ধ ঘোষণা করা হলেও শিক্ষক ও কর্মকর্তার ডরমেটরি খোলাই রয়েছে। যদি শিক্ষার্থীদের হল বন্ধ থাকে তাহলে শিক্ষক ও কমকর্তাদের ডরমেটরিও বন্ধ থাকা উচিৎ। ভর্তি পরীক্ষাকালীন হল বন্ধ রাখাকে নজীরবিহীন বলে উল্লেখ করেন এই শিক্ষক।
হল বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি শিকার করে উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ বলেন, আবাসিক হলগুলো পরীক্ষা কেন্দ্রের খুব কাছাকাছি হওয়ায় শৃংখলার স্বার্থে হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ