২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:৪৪

সামান্য মদপানেও হতে পারে ক্যানসার

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

সামান্য রেড ওয়াইনে নাকি হার্ট ভালো থাকে! অল্পস্বল্প বিয়ার সেবনে নাকি শরীর ঠান্ডা থাকে! পরিমিত স্কচ খেলে নাকি বয়সকালেও চাঙ্গা থাকা যায়! ব্র্যান্ডিতে নাকি সর্দিকাশি এড়ানো যায়! এই ধরণের চিন্তাভাবনা এখন অতীত।

তামাকের সঙ্গে এবার একই বন্ধনীতে চলে এলো সুরা। অন্তত কর্কটরোগের নিরিখে তো বটেই। পরিমিত মদপানের প্রচলিত ধারণাকে নস্যাৎ করে এই প্রথম আন্তর্জাতিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে এ কথা আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছে আমেরিকান সোসাইটি অব ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজি(অ্যাসকো।

ক্যানসার চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই সংস্থার যে বিশ্ববন্দিত বিজ্ঞানপত্রিকা রয়েছে, সেই জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল অঙ্কোলজিতে অ্যাসকোর বিশেষ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রায় ৬ ভাগ ক্যানসারের নেপথ্যে রয়েছে সরাসরি অ্যালকোহলের প্রভাব। সেই তালিকায় স্তন থেকে শুরু করে মুখ, গলা, খাদ্যনালী, লিভার, পাকস্থলী, অন্ত্র ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারও রয়েছে। বলা হয়েছে, ‘মদপানের পরিমাণের সঙ্গে সমানুপাতিক হারে বাড়ে ক্যানসারের ঝুঁকি।’

পরিমিত মদপানের বিষয়টিকে কাঁঠগড়ায় তুলে অ্যাসকোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সামান্য মদপান করলেও ক্যানসারের ঝুঁকি তাতে একটুও কমে না। বরং মদপানের প্রতি এমন দুর্বলতা খুবই বিপজ্জনক। সুরাও যে ক্যানসারের জন্ম দিতে দারুণ ভাবে সক্ষম সে বিষয়ে অজ্ঞ সিংহভাগ চিকিৎসকই।

অ্যাসকোর এই বিশেষ ‘স্টেটমেন্ট’ আন্তর্জাতিক মহলে ছড়িয়ে পড়তেই আলোড়ন পড়ে গেছে সবখানেই। কেননা, চিকিৎসকরা প্রায়ই পরিমিত মদপানের পক্ষে মত দিয়ে থাকেন। অনেকেরই বক্তব্য, শীতের সকালে দুধের সঙ্গে ব্র্যান্ডি মিশিয়ে খেলে শ্বাসনালীর সংক্রমণ এড়ানো যায়। কিংবা ভরা পেটে প্রতিদিন এক-দেড় পেগ মদপানে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে। অথবা গ্লিসারলমুক্ত বিয়ার সেবনে পেট ভালো থাকে।

এমনকি, কয়েকদিন আগে সায়েন্স টিভিতে আয়োজিত ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞদের একটি একটি সর্বভারতীয়দের সম্মেলনে বলা হয়েছিল, ‘ধূমপানের চেয়ে মদপান মন্দের ভালো।’ কিন্তু অ্যাসকো সাফ জানাচ্ছে, ‘এসব ভ্রান্ত ধারণা মনে পুষে রাখা মানে আখেরে ক্যানসারকেই আমন্ত্রণ জানানো।’

অ্যাসকোর প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘তামাকের সঙ্গে একটা সূক্ষ ফারাক রয়েছে অ্যালকোহলের। তামাক সেবনকারীদের সকলেরই যেমন ক্যানসারের সমান ঝুঁকি থাকে, মদপানের ক্ষেত্রে ঠিক তেমনটা নয়। মদপান কম করলে ঝুঁকি কম, মাঝারি করলে ঝুঁকি মাঝারি এবং বেশি করলে ঝুঁকিও বেশি।

দৈনিক মদপানের যে সীমা রয়েছে(পুরুষ ১২০ মিলি ও মহিলা ৬০ মিলি) এর চেয়ে কম মদপান করলেও ঝুঁকিটা রয়েই যায় বলে অ্যাসকোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কাজেই, যারা আগের ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে বসে আছেন, এখন থেকেই সাবধান হওয়া ছাড়া তাদের সামনে বিকল্প কোনো রাস্তা নেই।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :নভেম্বর ২৩, ২০১৭ ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ