নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া গ্রামে নাজমীন নামে সাত বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যার দায়ে তার মামার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তার ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। রায়ে মামলার অপর দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
বুধবার সকাল ১১টায় গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নিহত নাজমীনের বাবার নাম আক্কাছ আলী। সে শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া গ্রামে নানা বাড়িতে থাকতো। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রিপন শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া গ্রামের হাসমত আলী ওরফে হাশেমের ছেলে। যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন, বগুড়ার ভাটকান্দি গ্রামের মো. রহিমের ছেলে রবিউল ইসলাম (২০), শেরপুরের দীঘিরপাড় গ্রামের মো. মোস্তফার ছেলে মোজাফ্ফর (১৯)।
গাজীপুর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হারিছউদ্দিন আহম্মদ জানান, প্রায় ২০ বছর আগে শ্রীপুর উপজেলার চকপাড়া গ্রামের হাসমত আলীর মেয়ে আছমা বেগমের সঙ্গে আক্কাছ আলীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের নাসরিন ও নাজমীন নামে দুই কন্যা সন্তান হয়। পরে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হলে আছমা তার দুই কন্যা নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
২০১৫ সনের ৩০ অক্টোবর রাতে জমিজমা ও পারিবারিক বিরোধের জেরে ঘুমিয়ে থাকা শিশু নাজমীন গলাকেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা আছমা বেগম বাদী হয়ে ওইদিন শ্রীপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক খন্দকার আমিনুর রহমান তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ৬ জানুয়ারি মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে দণ্ডপ্রাপ্ত রিপন স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। মামলার এজাহারনামীয় আসামি আব্দুল করিমকে ফাঁসানোর জন্য তিনজন মিলে শিশুটিকে হত্যা করে বলে স্বীকারোক্তিতে তিনি জানান। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার আদালত এই রায় দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি হারিছ উদ্দিন আহমদ। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ও ওয়াহিদুজ্জামান আকন (তমিজ)।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ