আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সরকারের অত্যন্ত কঠোর নিয়ন্ত্রণ ‘জাতিগত বৈষম্যে’ রূপ নিয়েছে। মঙ্গলবার অ্যামনেস্টির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করা হয়। প্রতিবেদনটিতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সরকারের বহু বছর ধরে চলা বৈষম্য ও নিষ্ঠুর দমনপীড়ন কীভাবে চলমান সংকট ডেকে এনেছে তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি ও বাসস। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের করুণ অবস্থা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের কথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন দেশের মানুষ।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, আগস্ট মাস থেকে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সৈন্যদের হাতে রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের বর্ণনা দিয়েছেন। এরই মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। তবে গত সপ্তাহে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান বলেছেন, ঢাকার প্রস্তাবিত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে গ্রহণ করা তাদের পক্ষে ‘সম্ভব নয়’। একশ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের যেভাবে নিষ্ঠুর ও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তা ‘বৈষম্যজনিত মানবতাবিরোধী অপরাধের’ সংজ্ঞায় পড়ে।
অ্যামনেস্টির সিনিয়র ডিরেক্টর ফর রিসার্চ অ্যানা নিসট্যাট বলেন, ‘মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ এইসব রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুদের সঙ্গে সম্পূর্ণ অমানবিক ও চরম বৈষম্যমূলক আচরণ করে চলেছে।’ বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে মুসলিম এই জনগোষ্ঠীটিকে চরম ঘৃণা ও অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখা হয়। ১৯৮২ সালের দমনমূলক নাগরিক আইন প্রণয়নের পর থেকে তাদের ওপর এই বৈষম্য চলে আসছে। আইনটি প্রণয়নের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে সব ধরনের অধিকার হরণ করা হয়। তাদেরকে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করা হয় না। দেশটির সরকার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ ‘বাঙ্গালী’ হিসেবে অভিহিত করে আসছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি