নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত অঞ্চলের যেসব এলাকায় এবছর গম চাষ করেছিলেন তা ইতিমধ্যেই জ্বালিয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য মোট চার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে কৃষকদের।
খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের দুটি জেলা- নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদের ওপরে কৃষি দপ্তরের বিশেষ নজর দিচ্ছে- কারণ সেখান থেকেই ভারতে রোগ ছড়ানোর সবথেকে বেশী সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ও সীমান্তবর্তী এলাকা হরিহরপাড়ার জন প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন বলেন, গত মৌসুমে শুধু আমাদের মুর্শিদাবাদ জেলাতেই প্রায় ৪৮০ হেক্টর জমিতে বোনা গম এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার পাঁচটি ব্লকে এই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ওই ফসল নষ্ট করে দিতে হয়েছে। প্রথমে কৃষকরা বুঝতেই চাইছিলেন না, কিন্তু পরে সরকারি ব্যবস্থায় সেই সব গম নষ্ট করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণও দিয়েছি আমরা।
গত বছর বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলেও একইভাবে গমের ফসল নষ্ট করা হয়েছে রোগ আটকাতে। আর পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় পরের দুবছর যাতে কেউ গম চাষ না করেন, তার জন্য সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রচার। কৃষিবিজ্ঞানীরা মনে করছেন ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে আক্রান্ত গমের বীজ ভারতে প্রবেশ করে থাকতে পারে।
হরিয়ানার কারনালে কেন্দ্রীয় গম ও বার্লি গবেষণা ইন্সটিটিউটের কৃষিরোগ বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক দেবেন্দর পাল সিংয ব্লাস বোগের বিষয়ে বলেন, প্রথম ব্রাজিলে গমের ফলনে এই ছত্রাক রোগ দেখা যায় – তারপরে সেটি দক্ষিণ আমেরিকার নানা দেশেও ছড়ায়। এটা এশিয়ার এই অঞ্চলের রোগ নয়। তবে বাংলাদেশ সম্প্রতি ওইসব দেশ থেকে সস্তার গম আমদানি করেছে- কিছু চাষি হয়তো সেই গম বীজ হিসাবে ব্যবহার করেছেন আর তার থেকেই সেদেশে ওই রোগ ছড়িয়েছে।
সেইজন্যই সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যেই রোগটাকে বেধে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেন ভারতের গম ও বার্লি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান কৃষিরোগ বিশেষজ্ঞ সিং। কৃষিরোগ বিশেষজ্ঞ দেভেন্দর পাল সিং জানান, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রতিটি রাজ্যেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্য অঞ্চলে গম চাষ খুব একটা হয় না, তাই মূল নজরটা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দুইটি জেলাতেই।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ