আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিন। যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনের সিনিয়র দূত সায়েব ইরেকাত গতকাল শনিবার ঘোষণা দেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র তার দেশ থেকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশনের (পিএলও) কার্যালয় বন্ধ করে দেয়, তাহলে তারা সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য হবেন। ‘ওয়াশিংটনে পিএলও অফিস চালু রাখার কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছে না’- মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এমন মন্তব্যের পরই ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এ ঘোষণা দিল। খবর: আলজাজিরা ও বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে পিএলও অফিস চালানোর ক্ষেত্রে ১৯৮০ সালের পর প্রথমবারের মতো এমন বাধা এল। পিএলও মহাসচিব সায়েব ইরেকাত বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট রাজধানীতে পিএলও’র কূটনৈতিক কার্যালয় পরিচালনা আর নবায়ন করবে না। অবৈধ বসতি স্থাপনসহ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ তদন্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কাছে আবেদনের পরই যুক্তরাষ্ট্র এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যদি সত্যিই ট্রাম্প প্রশাসন পিএলও কার্যালয় বন্ধ করে দেয়, তাহলে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক আর টেনে নেওয়া সম্ভব হবে না উল্লেখ করে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’ পিএলও’র এই সিনিয় কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, ‘এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক এবং অগ্রহণযোগ্য। আমরা যখন একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে চলেছি, তখন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর (ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী) কাছে নতি স্বীকার করে ট্রাম্প প্রশাসন এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। এতে এতদিনের শান্তি প্রক্রিয়ায় ভেস্তে যেতে বসেছে।’
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ-আল মালকি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, প্রতি ছয় মাস পরপর ওয়াশিংটনে পিএলও কার্যালয় চালানোর চুক্তি নবায়ন করে আসা হয়। এবারই তা নবায়নে অনীহা দেখিয়েছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। তিনি বলেন, ‘দু’দিন আগে স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি চিঠির মাধ্যমে তারা জানতে পারেন, মার্কিন কর্তৃপক্ষ সে দেশে ফিলিস্তিনি সংস্থাটির অফিস চালু রাখার বিষয়ে যথেষ্ট কারণ আর খুঁজে পাচ্ছে না।’ এমনটি অতীতে কখনই ঘটেনি বলেও মন্তব্য করেন রিয়াদ আল-মালকি।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। তবে এর মধ্যেই এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে ফিলিস্তিনে। পিএলও কার্যালয় বন্ধ করলে আরব বিশ্বে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও মনে করছেন ফিলিস্তিনি নেতারা। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে খুবই অবাক হয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এটিকে মার্কিন আইনের বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন।
ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি চুক্তিতে প্রভাব তৈরি করার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প তার হাতে কিছু রাখতে চান, আর সে জন্যেই যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণ বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন আনার সুযোগ রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি