নিজস্ব প্রতিবেদক:
আপন জুয়েলার্সে গ্রাহকদের গচ্ছিত রাখা স্বর্ণালংকার আগামী সোমবার প্রয়োজনীয় রশিদ দেখিয়ে তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার আপন জুয়েলার্সের তিন মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালকের পক্ষে এইচ এম শরিফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান সাংবাদিকদের বলেন, যারা অবৈধভাবে ব্যবসা করছে তাদের প্রতি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এসব ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইসির এক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, এনবিআর যেকোনো সময়ে যেকোনো করদাতার আয়-ব্যয়ের তথ্য খতিয়ে দেখার আইনি অধিকার রাখে। সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে রেগনাম গ্রুপের মালিক ও তার ছেলে এবং আপন জুয়েলার্সের মালিক ও তার ছেলে সম্পর্কে বিভিন্ন নেতিবাচক তথ্য আসছে। এসব ব্যক্তিরা সমাজে প্রভাবশালী। এনবিআর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ চার ব্যাক্তির আয়কর রিটার্নের তথ্য যাচাই করবে।
এ ছাড়া শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শোরুমে বেআইনিভাবে মজুদ সোনা ও ডায়মন্ড উদ্ধার করে। আটক অবৈধ পণ্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে ও জিজ্ঞাসাবাদে গতকাল বেলা ১১টায় শুল্ক গোয়েন্দা সদর দপ্তরে সশরীরে হাজির হতে আপন জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারীদের সমন জারি করা হয়। আপন জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী তিনজন দিলদার আহমেদ, গুলজার আহমেদ এবং আজাদ আহমেদ গতকাল শুনানিতে হাজির হন। তারা লিখিত ভাবে সকল আটক পণ্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ১৫ দিন সময় প্রার্থনা করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ২৩ মে বেলা ২টায় শুল্ক গোয়েন্দা সদর দপ্তরে আবারো সশরীরে উপস্থিত হয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে ব্যাখ্যাহীনভাবে মজুদ স্বর্ণ ও ডায়মন্ড এর ব্যাপারে শুনানিতে অংশগ্রহণে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, সিআইসি থেকে মোহাম্মদ হোসেন, সাদমান সাকিফ, দিলদার আহমেদ ও সাফাত আহমেদের গত কর বছরের আয়কর রিটার্নের তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। গত বৃহস্পতিবার আয়কর রিটার্নের তথ্য চেয়ে সিআইসি সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলে চিঠি পাঠায়।
শুল্ক গোয়েন্দা দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আপন জুয়েলার্সের বিভিন্ন শাখায় রিপেয়ারিং ও এক্সচেঞ্জের জন্য যেসব গ্রাহক তাদের সোনা এবং অলংকার গচ্ছিত রেখেছিলেন (১০ কেজির মতো), তাদেরকে সোমবার (২২ মে) বেলা ২টায় রশিদসহ সেগুলো অক্ষত অবস্থায় ফেরত দেওয়া হবে। আপন জুয়েলার্সের মালিকরা এ ব্যাপারে গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন। গ্রাহকদের সোনা এবং অলংকার ফেরত দেওয়ার সময় আপন জুয়েলার্সের শাখাগুলোতে সোমবার মালিকপক্ষ এবং শুল্ক গোয়েন্দারা উপস্থিত থাকবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, শাখাগুলোর যেসব লকারে আপন জুয়েলার্সের গুরুত্বপূর্ণ কাগজ রয়েছে, যা তাদের আইনি সহায়তার জন্য প্রয়োজন হবে, তা মালিকদের উপস্থিতিতে ১৮ মে হস্তান্তর করা হবে। তা সংগ্রহ করার জন্যও মালিকপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র ও দলিলাদি সংগ্রহের পর ২৩ মে মালিকপক্ষকে শুল্ক গোয়েন্দাদের শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা/এমএইচ