কক্সবাজার প্রতিনিধি:
টেকনাফের ওপারে মিয়ানমারের সীমান্তে আজ বৃহস্পতিবার ফের ভারী গোলা বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে থেকে কালো ধোঁয়াও দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আগুনের শিখা ও ধোঁয়ার কুণ্ডলি সীমান্তের এপার থেকে দেখেছেন স্থানীয়রা। হঠাৎ করেই গুলির শব্দে সীমান্তের এপারের মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আজ বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে উখিয়া সীমান্তের আনজুমানপাড়ার ওপারে মিয়ানমারের টেকিবনিয়া ও মংডু এলাকার মাঙ্গালা পাড়ায় এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন।
রোহিঙ্গারা জানান, আরকানে মংডু এলাকার অনেক গ্রামে অগ্নিসংযোগ করা হলেও মাঙ্গালা গ্রামটি এতোদিন রক্ষিত ছিল। ওই গ্রাম থেকে কয়েকটি পরিবার বাংলাদেশে এলেও বেশির ভাগ পরিবার রয়ে যায়। জানা গেছে, ওই গ্রামের লোকজন বেশির ভাগ সীমান্তের বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত। আরকানের প্রশাসনকে কোটি কোটি (অর্থ) কিয়াতের বিনিময়ে ম্যানেজ করে ওই ব্যবসায়ীরা গ্রামটি রক্ষা করেছিলেন। আরো জানা গেছে, ওই গ্রামের ‘হুক্কাটা’ (চেয়ারম্যান) ছিলেন বৌদ্ধ (মগ)। তিনি প্রশাসনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে টাকার লেনদেন করতেন। তিনি সেনাদের কাছ থেকে এতোদিন গ্রামটি রক্ষা করেছিলেন। হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নতুনভাবে গোলাগুলি ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে অজানা আতংক দেখা দিয়েছে।
এদিকে, উখিয়া সীমান্তবর্তী রাখাইনের অভ্যন্তরে ঢেকিবনিয়া গ্রামেও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া রাখাইনের আরো কয়েকটি গ্রামে বিক্ষিপ্তভাবে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা গেছে। টেকনাফ-২ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক শরিফুল ইসলাম জোমাদ্দার ওপারের বিভিন্ন সীমান্তে গুলির আওয়াজের শব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সীমান্তে জওয়ানদের নিয়মিত টহল জোরদার রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের আরকানে সহিংসতা শুরু হলে রোহিঙ্গা মুসলিমদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও হত্যা করে সেনারা। এর ফলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয়ে পালিয়ে আসেন এবং এখনো প্রতিদিন রোহিঙ্গা পালিয়ে আসতে থাকেন।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি