২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:৪৩

পরবর্তী পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে জিম্বাবুয়ে

দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক:  

সেনাবাহিনী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটছে জিম্বাবুয়ের সাধারণ মানুষের। গণমাধ্যমের সুবাদে তাদের জানা হয়েছে, দীর্ঘদিন দেশ শাসন করা প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে এখন গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন। তবে যার জন্য তার এই পরিণতি, সেই প্রিয়তমা স্ত্রী গ্রেস মুগাবে নাকি তাকে ফেলে নামিবিয়ায় পালিয়ে গেছেন। অন্তত এমন গুজবই শোনা যাচ্ছে। তবে এই দাবির সত্যতা এখনও পাওয়া যায়নি। দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় নেতা এমারসন নানগাগুয়া’কে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর থেকেই শঙ্কটের শুরু। জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনী এবং নিজ দল জানু পিএফ পার্টির ভেতরেই অসন্তোষ দেখা দেয়।

সেটি তীব্র আকার ধারণ করে যখন মুগাবে তার স্ত্রীকে সেই পদে বসান। যাকে নিয়ে দেশটিতে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে গ্রেস মুগাবের বিলাসবহুল জীবন যাপনও সাধারণ মানুষের কাছে ভালো লাগেনি। হারারে’তে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও বিমানবন্দর দখলের পর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মূলত রবার্ট মুগাবের পাশে থাকা চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধেই তাদের এই অভিযান। কিন্তু এটা পরিস্কার নয়, গৃহবন্দী মুগাবে কি পুনরায় সরকারে বহাল হবেন নাকি পদচ্যূত ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন জিম্বাবুয়ের হাল ধরবেন।

বর্তমানে বিদ্রোহী তকমা নিয়ে মুগাবের দলের জনপ্রিয় এই শীর্ষস্থানীয় নেতা দক্ষিণ আফ্রিকার আশ্রয়ে আছেন। সেক্ষেত্রে তার ফিরে আসার বিলম্বের মধ্যে সেনাপ্রধানও ক্ষমতার সুযোগ হাত ছাড়া নাও করতে পারেন। ব্রিটিশদের শাসন থেকে ১৯৮০ সালে জিম্বাবুয়েকে মুক্ত করার পর থেকে দেশটির শাসক হিসেবে থেকেছেন ৯৩ বছর বয়সী রবার্ট মুগাবে। তবে স্ত্রী গ্রেস মুগাবের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করায় দলের ভেতর অসন্তোষ দানা বাঁধছিল। কেননা বর্ষীয়ান মুগাবের উত্তরসূরি হিসেবে এমারসনকেই পছন্দ ছিল দলের অধিকাংশ সদস্যের।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ক্রমেই গ্রেস মুগাবের বলয়ে চলে যাচ্ছিলেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট। দেশটির শাসনব্যবস্থা কার্যত নিজেদের হাতেই তুলে নিচ্ছিলেন গ্রেস। ভাইস প্রেসিডেন্টের পদে গ্রেসকে নিয়োগ দেয়ায় জনগণও তেমনটিই মনে করছিল। তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, একই চিন্তা সেনাবাহিনীর মধ্যেও দেখা দেয়ায়। এদিকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের বিরোধী দলীয় নেতা তেনদাই বিটি দেশে অন্তবর্তী সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে। যদিও সেনা কর্তৃপক্ষের তরফে এর কোনো উত্তর আসেনি। এমন অবস্থায় আফ্রিকান সংগঠন সাউদার্ন আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি বা এসএডিসি বোতসোয়ানায় বৃহস্পতিবার জরুরী বৈঠক ডেকেছে। অন্যদিকে, দেশে সেনাশাসন জারি হলেও জিম্বাবুয়ের কোনো স্থানে সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি। জিম্বাবুয়েতে থাকা বিবিসি’র প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রাজধানী হারারে’র পথে পথে থমথমে অবস্থা বিরাজ করলেও জীবনযাত্রা স্বাভাবিকই রয়েছে।

তবে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করলেও অধিকাংশ মানুষ এখনও রবার্ট মুগাবে’কেই ভালোবাসেন। তাদের আশা গৃহবন্দীত্ব ঘুচিয়ে মুগাবে বাইরে বেরিয়ে এলেই দেশের পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :নভেম্বর ১৬, ২০১৭ ৩:১৪ অপরাহ্ণ