আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জিম্বাবুয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জেবিসির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। তবে এটি কোনো অভ্যুত্থান নয়, বরং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল কনস্ট্যানটিনো চিয়েঙ্গার অনুগত বাহিনী মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টেশন জেডবিসির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এ সময় রাজধানী হারারেতে ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। এ ছাড়া রাস্তায় সামরিক যান মোতায়েন করা হয়।
তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে ও তার পরিবার নিরাপদ আছে বলে সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। বুধবার জেবিসি টেলিভিশনেই এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে প্রেসিডেন্টকে ঘিরে থাকা অপরাধীদের দলকে লক্ষ্য করে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, অভিযান শেষ হলেই দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট মুগাবে গত সপ্তাহে তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে বরখাস্ত করলে চলমান এই সঙ্কটের সূচনা হয়। নানগাগওয়াকে এতদিন মুগাবের উত্তরসূরী ভাবা হলেও সম্প্রতি তার জায়গায় ফার্স্ট লেডি গ্রেস মুগাবের নাম সামনে চলে আসে।
মুগাবের স্ত্রীর সঙ্গে নানগাগওয়ার এই বিরোধে ক্ষমতাসীন দল জানু-পিএফে বিভক্তি তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করে গ্রেস মুগাব বলেন, নানগাগওয়া তার বিরোধিতাকারীদের খুন করতে চান। মুগাবে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ থেকে নানগাগওয়াকে সরিয়ে দিলে প্রতিক্রিয়া দেখান সেনা প্রধান চিয়েঙ্গা। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের টানাপড়েন মিটিয়ে দিতে তার বাহিনী প্রস্তুত। এরপর জানু-পিএফ এর পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের শান্তি নষ্ট করতেই সেনাপ্রধান উসকানিমূলক ওই বক্তব্য দিয়েছেন, যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।
খবরে বলা হয়, পাল্টাপাল্টি এই বক্তব্যের মধ্যে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে মোড় নেয়। মঙ্গলবার হারারের বাইরে বিভিন্ন সড়কে সেনাবাহিনীর ট্যাংক আর সাঁজোয়া বহর অবস্থান নিলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের প্রতি সতর্কতা জারি করেছে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মার্কিন দূতাবাস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কানাডা সরকারও তাদের নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ