আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
এ বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ইরানে ৫০০ জনেরও অধিক প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন সাত হাজারের চেয়েও বেশি মানুষ। গত রোববার ইরান-ইরাক সীমান্তে ৭.৩ উচ্চমাত্রার এ শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় কুর্দি অধ্যুষিত সুলায়মানিয়ায়। গভীরতা ছিল ৩৩ দশমিক ৯ কিলোমিটার। মূল আঘাতের পর ৪ দশমিক মাত্রার ভূমিকম্পের কথা জানিয়েছে মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থাটি। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানায়, ইরানে কমপক্ষে ৫৩০ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭,৪৬০ জন।
ইরানে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও ইরাকে তেমন বেশি আঁচড় ফেলতে পারেনি ভূকম্পনটি। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ডাঃ সাইফ আল-বাদিরের মতে, ইরাক সীমান্তে কমপক্ষে ৮ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হন কমপক্ষে ৫৩৫ জন।
সরকারের আহবানে হতাহতদের চিকিৎসায় তেহরানে শত শত মানুষের বিশাল লাইন সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এক বার্তায় বেঁচে যাওয়া মানুষদের উদ্ধারের জন্য অনুসন্ধান দলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তবে ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
উদ্ধার কার্যক্রমের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ কেরমানশাহর পাহাড়ি এলাকায় বাড়িঘর ধসে ও পাহাড়ধসে আটকে পড়ে আছে অনেক মানুষ। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ইরাক সীমান্ত থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার (১০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশটির সরপোল-ই-যাহাব শহরে অন্তত ২৩৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে। শহরটির জনসংখ্যা ৩০ হাজার বলে জানা গেছে।
গত এক দশকে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ইরান ও ইরাক সীমান্তবর্তী অঞ্চল পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। যে কটি স্থাপনা এখনও টিকে রয়েছে, আফটার শকের আশঙ্কায় সেখানেও নিরাপত্তা খুঁজে পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। খোলা আকাশের নিচে থাকা অধিকাংশ মানুষের এখন নিরাপদ আশ্রয় প্রয়োজন।
পর্বতাঞ্চলীয় ইরানের কারমানশাহ্ প্রদেশের দুর্গত এলাকার মানুষদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। তবে ধ্বংস্তূপে পরিণত হওয়া মানুষদের খাদ্য ও পাণীয় ছাড়াও এখন প্রয়োজন নিরাপদ আশ্রয়ের। তাছাড়া সব এলাকায় এখনও ত্রাণ পৌঁছে দেয়াও সম্ভব হয়নি। সহায় সম্বল হারিয়ে হাজার হাজার মানুষ এখন খোলা স্থানে প্রচণ্ড শীতে রাত পার করছে। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ