২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:০৬

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ১০ প্রস্তাব হিউম্যান রাইটস ওয়াচের

দৈনিক দেশজনতা অনলাইন ডেস্ক:  

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের রক্ষার্থে ১০ প্রস্তাবনা দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। নিউ ইয়র্কভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা তাদের প্রস্তাবনায় বলেছে, মিয়ানমারকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সঙ্গে ফেরত নিতে হবে। অন্যদিকে, যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তাদের শরণার্থী হিসেবে গণ্য করতে হবে। এ ছাড়া তাদের বসতবাড়ি ফিরিয়ে দেয়া ও নষ্ট হওয়া সম্পদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথাও বলা হয়েছে প্রস্তাবনায়।

সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এসব প্রস্তাব দিয়েছে। এদিকে, গতকাল থেকে শুরু হওয়া এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলন এবং রোববার ম্যানিলায় ৩১তম আসিয়ান লিডার্স সামিটে (আসিয়ান নেতাদের সম্মেলন) রোহিঙ্গা সংকটকে অগ্রাধিকার দিতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ১০ প্রস্তাবনা গুলো হলো:
১। যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছেন, তাদেরকে শরণার্থী হিসেবে গণ্য করতে হবে। দিতে হবে পূর্ণাঙ্গ শরণার্থী সহায়তা।
২। আশ্রয়দাতা দেশ এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাসমূহকে যতটা সম্ভব মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থারা পরিস্থিতি বিবেচনা করে বৈষম্যহীনভাবে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।
৩। বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত রাখতে হবে।
৪। বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক আচরণবিধি মেনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেশে ফিরে যেতে বাধ্য করা যাবে না।
৫। মিয়ানমারকে পালিয়ে আশা শরণার্থীদের সসম্মানে ফিরিয়ে নিতে হবে।
৬। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে না চাইলে তাদের জোর করে ফেরত পাঠানো যাবে না।
৭। শরণার্থী এবং বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের বসতবাড়ি ফিরিয়ে দিতে হবে। নষ্ট হওয়া সমপদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৮। শরণার্থীদেরকে তালিকাভুক্ত করা অব্যাহত রাখতে হবে বাংলাদেশকে।
৯। শরণার্থী শিবিরগুলো টেকসই না হওয়ায় তাতে শরণার্থীদের বসবাস প্রলম্বিত করা যাবে না।
১০। আপৎকালীন সংকট নিরসনে রোহিঙ্গাদের নিজ আবাস ভূমিতে না পাঠিয়ে নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তুলে সেখানে প্রত্যাবাসনের যে অভিপ্রায় মিয়ানমার ব্যক্ত করেছে, তা কোন গ্রহণযোগ্য সমাধান নয়।

উল্লেখ্য, ২৫শে আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী উত্তর রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত জাতি নিধনের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এই অভিযানজুড়ে সে দেশের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গা গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট এবং তাদের ঘরবাড়ি ও সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এ পর্যায়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গার সংখ্যা ছয় লাখ তেরো হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন মোট রোহিঙ্গার সংখ্যা দশ লাখেরও বেশি। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এই নারকীয় বর্বরতাকে ইতিমধ্যেই মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :নভেম্বর ১১, ২০১৭ ১:১১ অপরাহ্ণ