আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইয়েমেন থেকে সৌদি আরবের রাজধানী লক্ষ্য করে শনিবার মিসাইল ছোড়ার ঘটনা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে। দেশটিতে হুতি বিদ্রোহীদের দমনে দুই বছর ধরেই সৌদি আরব এবং তার আরব জোট বিমান হামলা চালিয়ে আসছিল। দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই ইয়েমেনে সাময়িকভাবে স্থল, নৌ ও আকাশপথ বন্ধ করে দেবার ঘোষণা দেয় সৌদি জোট।
আর এতে করে জাতিসংঘ ও রেডক্রসের মতো সংস্থার ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে পরে। এই অবস্থাকে ত্রাণ কার্যক্রমে বিপর্যয় বলে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
রেডক্রস জানিয়েছে, ইয়েমেনের সীমান্ত বন্ধের এই ঘোষণায় তাদের ক্লোরিন ট্যাবলেটের চালান বন্ধ করতে হয়েছে। যে ট্যাবলেটগুলো পানি শোধনের জন্য পাঠানো হচ্ছিল কলেরা উপদ্রুত এলাকায়, যেখানে অন্তত ৯ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। সীমান্তে আটকে আছে ইনসুলিনসহ আরো কিছু জীবন রক্ষাকারী ওষুধ।
সংস্থাটির এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে, যদি খাদ্য এবং ওষুধ সঠিকভাবে আক্রান্ত মানুষের কাছে না পৌঁছানো যাচ্ছে না, তাই এটি এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইয়েমেনের একটি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত ফুটেজের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, তারা বলছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি রিয়াদকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়েছে।
সৌদি আরব এই হামলার জন্য দায়ী করেছে ইরানকে। যদিও ইরান প্রথম থেকেই হুতি বিদ্রোহীদের সহায়তার বিষয়টি নাকচ করে এসেছে।
২০১৫ সালে ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে সৌদি আরব জড়িয়ে পরার পর থেকে সৌদি জোটের বিমান আক্রমণে এ পর্যন্ত আট হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের শতকরা ৬০ ভাগই হচ্ছে বেসামরিক লোক। ইয়েমেনের হুতিপন্থী এক সংবাদমাধ্যমের খবর বলা হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় কিং খালেদ বিমানবন্দরের ওপর বিদ্রোহীরা একটি বুরকান এইচ-টু শ্রেণীর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। ইয়েমেনের সীমান্ত থেকে এই বিমানবন্দরের দূরত্ব সাড়ে আটশো কিলোমিটার।
সৌদি সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছে, সৌদি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আকাশেই ধ্বংস করা হয়। কিন্তু এর কিছু অংশ ওই বিমানবন্দরে গিয়ে পড়ে।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-যুবেইর সিএনএনকে বলেছেন, এই ঘটনার সাথে লেবাননের হেযবোল্লাহও জড়িত। ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে হিজবুল্লাহ গেরিলারা এই রকেট ছোঁড়ে বলে তিনি জানান।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ