২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ২:২১

নওগাঁয় দেয়াল পত্রিকা উৎসব

 

নওগাঁ প্রতিনিধি:

দেয়াল পত্রিকা। এক ধরনের হাতে লিখা পত্রিকা। যেখানে গল্প, কবিতা ও চিত্রাঙ্কনসহ অন্যান্য রচনা প্রকাশ করা হতো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অন্যদের সঙ্গে নিজের লেখাটি জানান দিতে এটি করে থাকত। এছাড়া গল্পকার ও সাহিত্যকরাও নিজেদের লেখা দেয়াল পত্রিকায় প্রকাশ করতেন। এটি দেয়ালিকা নামেও পরিচিত। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে সেটি আজ বিদায়ের পথে। বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের দেয়াল পত্রিকা বিষয়ে জানান দিতে কাজ করছেন, স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ নওগাঁ’। নতুন করে তরুনদের জাগ্রত করতে শনিবার দিনব্যাপী শহরের পুরাতন কালেক্টরেট চত্বর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চে উৎসবের আয়োজন করা হয়।

জানা যায়, এক সময় হাতে লিখা দেয়াল পত্রিকার বেশ প্রচলন ছিল। আর ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল এ দেয়াল পত্রিকা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনগুলো তাদের কথা জানান দিতে হাতে লিখে দেয়াল পত্রিকায় প্রকাশ করতো। যেখানে সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকা বের হতো। তবে পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকা বেশি প্রকাশ করা হতো। এতে শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীল প্রতিভা প্রকাশের জন্য নিজেদের চারপাশের পরিবেশ ও মনোজগতের বিষয়ে বর্হিপ্রকাশ ঘটানোর সুযোগ পায়। অনেক পত্রপত্রিকায় ছোট গল্প, কবিতা, ছড়া ও নকশা প্রকাশ করা সম্ভব হয়না। তাই বলে কি তাদের প্রকাশ বন্ধ থাকবে। নিজেরা উদ্যোগ নিয়েই দেয়াল পত্রিকায় সেগুলো প্রকাশ করে থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের লিখার আগ্রহ অনেকগুন বেড়ে যায়।

বর্তমান সময়ে আধুনিক ডিজাইনের প্রকাশনা, টেলিভিশন, তথ্যপ্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক, স্মার্ট ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার হওয়ায় দেয়াল পত্রিকায় এখন বিলুপ্তির পথে। ফলে গুরত্ব কমেছে দেয়াল পত্রিকার। এখন ফেসবুকে স্থান করে নিয়েছে। সেখানেই তাদের মতামত প্রকাশ করা হচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া দেয়াল পত্রিকা বিষয়ে নতুন প্রজন্মকে জানান দিতে এবং ছোটদের শুপ্ত মেধাকে জাগ্রত করতে গত আগষ্ট মাস থেকে কাজ করছে ‘একুশে পরিষদ নওগাঁ’। জেলার ৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রন জানানো হলেও সেখানে ২৫টি স্কুল অংশ নেয়। গত বন্যার কারণে কিছুটা বিলম্ব ঘটলেও আবার নতুন করে শুরু হয় কার্যক্রম।

আলোচনা সভায় সংগঠনের সভাপতি অ্যাড. ডিএম আব্দুর বারীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট গোলাম মো: শাহনেওয়াজ, সংগঠনের উপদেষ্টা সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, কবি সাহিত্যিক আতাউল হক সিদ্দীকি, বিন আলী পিন্টু, সাধারন সম্পাদক এমএম রাসেল, আবৃতি পরিষদ নওগাঁ সভাপতি ডা: ময়নুল হক দুলদুল, শিক্ষার্থী সহ প্রমূখ। এসময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রষ্ঠিানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। উৎসবে ২৫টি স্কুলের ১১০টি পত্রিকা প্রদর্শিত হয়।

স্থানীয় একুশে পরিষদ নওগাঁ’র সাধারন সম্পাদক এমএম রাসেল বলেন, দেয়াল পত্রিকার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মনোভাব, আঁকাআকি ও লেখালেখির অভ্যাস বৃদ্ধি পাবে। এতে করে তাদের লেখার আগ্রহ ও জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। আগামীতে তারা আরো এগিয়ে যাবে। দেয়াল পত্রিকা উৎসবে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রতিবছর এর আয়োজন করা হবে।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :নভেম্বর ৪, ২০১৭ ৫:৪২ অপরাহ্ণ