২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:০৬

ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে ডেলিভারিতে ভোগান্তি

 

ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট ডেলিভারি ক্ষেত্রে সিডিউল মানছে না পাসপোর্ট অফিস। ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায় অফিসে পাসপোর্ট ডেলিভারি নিতে দূরদূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর আবেদনকারীরা অপেক্ষায় থাকে মোবাইল ফোনের ক্ষুদে বার্তার জন্য। সাধারণ ভাবে পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে সময় লাগে ১৫-২০ দিন আর ইমার্জেন্সি (জরুরি) হলে ৭-৯ দিন। কিন্তু সাধারণ ভাবে ৩০-৩৫ দিনেও মোবাইলের ক্ষুদে বার্তা আসে না। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাসপোর্ট প্রিন্টে আছে বলে পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে দেরি করা হয়।

এ বিষয়ে পাসপোর্ট ডেলিভারি নিতে আসা কালীগঞ্জের এক্তারপুর থেকে পাসপোর্ট নিতে আসা রাজু আহমেদ জানান, আমি আজ সহ মোট ৪দিন পাসপোর্ট নিতে আসলাম কিন্তুু আজো পেলাম না। পাসপোর্ট আমার খুব জরুরী প্রয়োজন। চিকিৎসার জন্য বাবাকে নিয়ে ভারতে যেতে হবে। আবার অফিস থেকে বললো রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র তৈরীর জন্য হেডঅফিসের প্রিন্টে যারা কাজ করে তারা সবাই সেখানে। আপনি আগামী সপ্তাহে এসে খোজ নিন।

হরিনাকুন্ডুর বড় ভাদড়া হিন্দু পাড়ার বৃদ্ধ রনি গোপাল বলেন, আমার পাসপোর্ট দেওয়ার কথা আজ। আমি অসুস্থ তাই যতদ্রুত সম্ভব চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে হবে। কিন্তু আমাকে পাসপোর্ট আজ দিলোনা। বললো রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র তৈরীর জন্য হেডঅফিসের প্রিন্টে যারা কাজ করে তারা সবাই সেখানে। আপনি আগামী সপ্তাহে আসেন। শৈলকুপার ফুলহরী বিত্তি পাড়ার থেকে পাসপোর্ট ডেলিভারি নিতে আসা হাসেম আলী বলেন,৩১শে অক্টোবর আমার পাসপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও এখন অফিস থেকে বললো কয়েকদিন পরে আসেন এখনও প্রিন্ট হয়ে আসেনি। তিনি আরো বলেন এতদুর থেকে বারবার কাজ কাম ফেলে আসা আমার জন্য খুব কষ্টের কিন্তু কি আর করার আমাদের হাতে তো আর কিছু নেই ! হরিনাকুন্ডুর মান্দার তলা থেকে আসা আশরাফুর জানান, আমাকে পাসপোর্ট না দিয়ে অফিস থেকে বললো সার্ভারে সমস্যা হওয়ার কারনে আপনার পাসপোর্ট এখনো প্রিন্ট হয়ে আসেনি আপনি সামনে সপ্তাহে খোজ নেন।

উত্তম কুমার নামে কালীগঞ্জ নলডাঙ্গার শীবনগর থেকে পাসপোর্ট নিতে আসা ব্যাক্তিও একই অভিযোগ করে জানান, আমার পাসপোর্ট টাও পেলাম না। কবে পাব অফিস থেকে সঠিক ভাবে তাও জানালো না বললো সামনে সপ্তাহে খোজ নিবেন। হরিনাকুন্ডুর কন্যেদহ থেকে নাসিমা খাতুন নামের আরেকজন পাসপোর্ট নিতে আসা মহিলা জানান আমি ২বার এসেছি এতদুর থেকে। আজ তারা বলছে আপনার পুলিশ রিপোর্ট আসেনি আপনি ডিএসবি অফিসে যোগাযোগ করুন। মেহেদি হাসান সবুজ তার আবেদনকৃত পাসপোর্টটি ৩১ শে অক্টোবর আনতে গেলে অফিস থেকে তাকেও ৩ থেকে ৪দিন পর আসতে বলা হয়। কেন বিলম্ব হচ্ছে তিনি এমন প্রশ্ন করলে উত্তরে অফিস কতৃপক্ষ তাকে বলেন, আপনার বাসায় কি পুলিশ গিয়েছিলো ? উনি হ্যা বললে অফিস কর্তপক্ষ পুলিশ রিপোর্ট চেক করে দেখেন ঠিক আছে। তখন তিনি বলেন আপনার রিপোর্ট আমরা আজ ঢাকাতে পাঠাবো আপনি ২থেকে ৩দিন পর খোজ নিন। পুলিশ রিপোর্ট কবে এসেছে সবুজ জানতে চাইলে অফিস কতৃপক্ষ ফাইল দেখে তাকে জানান ২৩ শে অক্টোবর এসেছে। এখন প্রশ্ন হলো ২৩ শে অক্টোবর পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাসপোর্ট অফিসে আসলেও কেনো এতদিন ফেলে রাখা হলো। আর পার্সপোর্ট ডেলিভারির দিন কেনই বা ঢাকাতে পাঠালেন পাসপোর্ট কর্তপক্ষ। এছাড়াও ৩১শে অক্টোবর ও ১লা নভেম্বর মাত্র ২দিনের অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, যাদের কে পাসপোর্ট প্রদান করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগ গ্রাহক দেরই আরো কয়েকদিন আগে পাসপোর্ট ডেলিভারির দিন ছিলো। পাসপোর্ট অফিসের এই গ্রাহক ভোগান্তি কমাতে অনতিবিলম্বে ভুক্তভুগিরা কতৃপক্ষের কাছে দাবী করেন।

এই সকল অভিযোগের পরিপেক্ষিতে ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক বজলুর রশিদ এর সাথে ( ০১৭৩৩৩৯৩৩৬৬) এই মোবাইল নম্বরে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের প্রধান সার্ভারের লিংক ডাউন থাকার কারনে সাময়িক অসুবিধার কথা উনি স্বীকার করে আরো বলেন, বর্তমানে সবকিছুই সাভাবিক আছে এবং অফিসের সকল কর্মকান্ড নিয়ম মাফিক চলছে।

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :নভেম্বর ৩, ২০১৭ ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ