নিজস্ব প্রতিবেদক:
অনুমোদনহীন ওষুধ হিসেবে আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে পরিচিত যে ‘স্পিরুলিনা’ ট্যাবলেট জব্দ করেছিল তা জব্দই থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বুধবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, স্পিরুলিনা মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর কিনা তার প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দাখিল করা হয়েছে। এরপর প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়া হয়নি। তবে, আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক জব্দকৃত স্পিরুলিনা জব্দই থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আপিল বিভাগের নির্দেশে এ বিষয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর কর্তৃক ‘স্পিরুলিনা’ একটি স্বীকৃত হারবাল ওষুধ। যা দেশের প্রথম সারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানসহ ৮২টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত, বিপণন ও বিক্রয় করে আসছে।
তবে দেশান বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের আমদানি পরবর্তী জব্দকৃত ‘স্পিরুলিনা’ এ ধরণের ফুড সাপ্লিমেন্ট আমদানি নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এবং জব্দকৃত স্পিরুলিনা কোন কোম্পানির এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখসহ গায়ে কোনো মূল্যও উল্লেখ নেই।
বাংলাদেশের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বেশি হওয়ায় ফুড সাপ্লিমেন্টের মেয়াদকাল কোনো অবস্থাতেই দুই বছরের বেশি দেয়া হয় না। কিন্তু আমদানি পরবর্তী জব্দকৃত স্পিরুলিনার মেয়াদ আগস্ট ২০১৭ তারিখে দুই বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এ অবস্থায় এগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনার দাবি রাখে।
প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, আমদানি পরবর্তী জব্দকৃত স্পিরুলিনা ভোক্তার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি হতে পারে।
জানা যায়, দেশান বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়া থেকে ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮০ পিস স্পিরিলুনা ট্যাবলেট আমদানি করে।
‘অনুমোদনহীন ওষুধ হিসেবে’ ভ্রাম্যমাণ আদালত রাজধানীর ভাটারায় আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান থেকে গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি জব্দ করে। সেই সঙ্গে দেশানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ২ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে রিট করলে গত বছরের ১৮ মে হাইকোর্ট রুল দিয়ে জব্দ করা স্পিরিলুনা ট্যাবলেট ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আদেশ স্থগিত করেন।
এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে গত ২৭ জুন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। পরবর্তীতে গত ১৬ আগস্ট জব্দ স্পিরুলিনার মেয়াদ আগামী বছরের এপ্রিলে শেষ হয়ে যাবে উল্লেখ করে তা অবমুক্তির জন্য দেশান বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল বিন ইলিয়াস আদালতে আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিনা তা পরীক্ষার করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ